কে বলে-টেস্ট ক্রিকেট মরে যাচ্ছে? ক্রিকেটের আসল ফরমেট তো এটাই, যার পরতে পরতে ছড়ানো রোমাঞ্চ। ডারবানে সেই রোমাঞ্চকর লড়াইটাই দেখা গেল শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। যে টেস্টে নাটকীয় এক জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। নিশ্চিত হারের মুখে থাকা দলটিই কুশল পেরেরার অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে জিতেছে ১ উইকেটে।
Advertisement
এর চেয়ে বেশি আর কি করতে পারতেন কুশল পেরেরা? দলকে জেতাতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে লড়লেন। সঙ্গীরা শুধু আসা যাওয়া করছিলেন। পেরেরা তবু ধৈর্য্যের প্রতিমূর্তি হয়েই রইলেন। শেষ ব্যাটসম্যান নিয়েও লড়ে গেলেন অবিশ্বাস্য দৃঢ়তায়। দশম উইকেটে বিশ্ব ফার্নান্ডোকে নিয়ে রেকর্ড গড়া এক জুটিতে ম্যাচ বের করেই মাঠ ছেড়েছেন এই সেঞ্চুরিয়ান।
শ্রীলঙ্কার সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল ৩০৪ রানের। চতুর্থ দিনে ৩ উইকেটে ৮৩ রান নিয়ে খেলতে নামে সফরকারিরা। সেখান থেকে ১১০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। জয় তখন দূরের বাতিঘর।
১২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা কুশল পেরেরাকে ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ সঙ্গ দেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ৯৬ রানের জুটি গড়ে ধনঞ্জয়া ফেরেন ৪৮ রানে। এর ৯ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একেবারেই ছিটকে পড়ে শ্রীলঙ্কা।
Advertisement
২২৬ রানের মধ্যে নবম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। এরপর আর জয়ের আশা করা সম্ভব? শেষ উইকেটে তখনও ৭৮ রান দরকার সফরকারিদের। কিন্তু কুশল পেরেরা হাল ছাড়তে চাইলেন না। বিশ্ব ফার্নান্ডোকে ওভারের পঞ্চম বা শেষ বলে সিঙ্গেল দিয়ে দিয়ে বারবার স্ট্রাইকে যাচ্ছিলেন তিনি।
এভাবেই রূপকথা লিখলেন পেরেরা। দশম উইকেটে ফার্নান্ডোকে নিয়ে গড়লেন ৭৮ রানের ম্যাচ জেতানো এক জুটি। সফল রান তাড়ায় যেটি এই উইকেটের বিশ্বরেকর্ড।
পেরেরা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৫৩ রানে। ২০০ বল মোকাবেলায় ১২ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কায় সাজানো মহাকাব্যিক ইনিংসটি তার ক্যারিয়ারের সেরা। তাই বলে বিশ্ব ফার্নান্ডোর অবদানকেও পেছনে রাখা যাবে না।
এগারতম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২৭টি বল মোকাবেলা করেছেন তিনি। করেছেন ৬ রান। সংখ্যার হিসেবে হয়তো বেশি কিছু নয়। তবে শ্রীলঙ্কার অসাধ্য সাধনের ম্যাচে এই ইনিংসটাও ছিল মহামূল্যবান।
Advertisement
এমএমআর/এমকেএইচ