প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফলাফলে আপত্তি জানিয়েছে ৯৫ হাজার ৬৯১ জন শিক্ষার্থী। গত মাসে প্রকাশিত ফলাফলে এ আপত্তি জানিয়ে ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে তারা। এদের মধ্যে কেউ প্রাপ্ত ফল বাড়ানো, কেউ ফেল থেকে পাস করার জন্য আবদেন করেছে বলে জানা গেছে।
Advertisement
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়। আগে থানা শিক্ষা অফিসার বরাবর এ আবেদন করত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। চলতি বছর টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে এ আবেদনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে খাতা পুনর্নিরীক্ষণ আগের মতোই জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সহায়তা নেবে ডিপিই।
ডিপিইর সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট প্রকৌশলী অনুজ কুমার রায় বলেন, চলতি বছর কেন্দ্রীয়ভাবে এ পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ফল প্রকাশের পরবর্তীতে নানা ধরনের অনিয়মের বিষয়টি মাথায় রেখেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়। ফল প্রকাশের পরদিন তথা ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে ৯৫ হাজার ৬৯১ শিক্ষার্থী ফল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে। আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পুনর্নিরীক্ষণ ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে। একইসঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির নির্ধারিত ৮৫ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মেধা ও কোটাভিত্তিক বৃত্তির তালিকাও প্রকাশ হবে বলে জানান তিনি।
প্রকৌশলী অনুজ কুমার রায় আরও বলেন, এবার সাতটি বিভাগ থেকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের ফল পরিবর্তনের জন্য বেশি আবেদন জমা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি আবেদন ইংরেজি বিষয়ে প্রায় ১৭ হাজার ২২১টি, গণিতে ১৫ হাজার ৭৮১টি, বাংলা বিষয়ে ১৪ হাজার ৩৩৮টি ও বিজ্ঞানে প্রায় ১২ হাজারের মত আবেদন জমা হয়েছে। ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফলেও আপত্তি জানিয়ে প্রায় ৫ হাজার আবেদন জমা হয়েছে। সব মিলে সারাদেশে ৯৫ হাজার ৬৯১টি আবেদন পড়েছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার ৭০৯টি। গত বছরের চেয়ে এবার ১৫ হাজার ৯৮২ আবেদন বেশি এসেছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আবেদনকারীদের পরীক্ষার খাতা নতুনভাবে মূল্যায়ন নয়, শুধু মূল্যায়নকারী শিক্ষকদের দেয়া নম্বরগুলো নতুনভাবে গণনা করা হবে। খাতায় প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে যোগে ভুল হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
জানা গেছে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী-পিইসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পায় ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ শিক্ষার্থী। এ পরীক্ষায় ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ২৫ লাখ ৮ হাজার ৯০৪ জন পাস করে। তার মধ্যে ১২ লাখ ১১ হাজার ৬০০ জন ছাত্র ও ১৪ লাখ ৪১ হাজার ২৯৬ জন ছাত্রী। প্রাথমিক সমাপনী ও ইবতেদায়িতে ছাত্রদের পাসের হার ৯৭ শতাংশ ৪৮ শতাংশ, আর ছাত্রীদের পাসের হার ৯৭ শতাংশ ৬৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পায় ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ জন। তার মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৬১ হাজার ৪১১ জন ও ছাত্রী ২ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ জন।
অন্যদিকে, ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পায় ১২ হাজার ২৬৪ জন। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৭ জন। এর মধ্যে পাস করে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৭ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৮ জন ছাত্র ও ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৯ জন ছাত্রী। গত ২২ নভেম্বর শুরু হয় পিইসি ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। শেষ হয় ৩০ নভেম্বর।
এমএইচএম/এনডিএস/এমকেএইচ
Advertisement