জাতীয়

‘টেকনাফের লোক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে’

ইয়াবা ব্যবসার ফলে টেকনাফের লোকদের বদনাম হচ্ছে। ইয়াবা ব্যবসার কারণে টেকনাফের নাম শুনলেই ছেলে-মেয়েদের ভালো জায়গায় বিয়ে হয় না, কক্সবাজার এবং ঢাকায় কেউ বাসা ভাড়া দিতে চায় না। সবাই আমাদের ঘৃণার চোখে দেখে। তাই এ ব্যবসা ছেড়ে দিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. সিরাজ।

Advertisement

শনিবার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৈরি করা মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণের পর এভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন তিনি।

ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. সিরাজ আরও বলেন, ‘আমি আগে ইয়াবা ব্যবসা করতাম, পরে দেখলাম এ ইয়াবা ব্যবসা খারাপ। এ ব্যবসার ফলে দেশের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ইয়াবার কারণে সারাদেশে টেকনাফ ও কক্সবাজারের বদনাম ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের মানুষের কাছে এমনকি কক্সবাজারের মানুষের কাছে নিজেদের টেকনাফের লোক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে। সবাই আমাদের ঘৃণার চোখে দেখে। টেকনাফের লোক শুনলে কক্সবাজার ও ঢাকা শহরে বাসা ভাড়াও দেয় না। ছেলে মেয়েদের স্কুলে ভর্তিসহ ভালো পরিবেশে মানুষ করতে কষ্ট হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ভুল বুঝতে পেরে এ ব্যবসা ছেড়ে দিলাম এবং আত্মসমর্পণ করেছি। আমি চাই ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হোক। আপনারা যারা ইয়াবা ব্যবসা করেছেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, সবাই আমাদের ঘৃণার চোখে দেখে, ইয়াবা ব্যবসা ছেড়ে দিন।’

Advertisement

সদ্য আত্মসমর্পণকারী এ ব্যবসায়ী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আমরা যারা আত্মসমর্পণ করেছি সরকার যেন আমাদের ক্ষমা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দেয়। আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা মোকাদ্দমাগুলোতে সুদৃষ্টি দেয়। আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে ইয়াবার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলব। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।’

ইয়াবা ব্যবসা বন্ধের পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেন, ‘পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ড সমন্বিতভাবে কাজ করলে ইয়াবার অনুপ্রবেশ ও ব্যবসা বন্ধ হবে। বর্ডারে যারা কাজ করে তারা ঠিকমতো আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে, যৌথ টহল দিলে কোনো অবস্থাতেই টেকনাফ সাগর ও সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা ঢুকতে পারবে না।’

এর আগে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। মন্ত্রী তাদের হাতে ফুল তুলে দেন। এ সময় পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কক্সবাজার টেকনাফের রাজনীতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এআর/এনডিএস/এমএস

Advertisement