মধ্য ইউরোপের পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিত ভিয়েনা। অস্ট্রিয়াতে সব মিলিয়ে ৮ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। দেশটিতে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্ম পিছিয়ে যাচ্ছে দেশি সংস্কৃতি সভ্যতা থেকে। এসব তরুণেরা বাংলা ভাষা যতটুকু শিখেছে তাদের বাবা-মার কাছ থেকে। এত বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি থাকা সত্ত্বেও এখানে কোনো বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এসব তরুণ প্রজন্ম বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছে সবই তাদের বাবা-মার কাছ থেকে।
Advertisement
প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভিয়েনার প্রবাসী বাংলাদেশিরা অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে থাকে। এ দিনটি উপলক্ষে বেশ কয়েকটি প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠন ছাড়াও ভিয়েনার বাংলাদেশ দূতাবাস আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপন করে থাকে।
তবে এখন পর্যন্ত ভিয়েনায় কোনো স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এমনকি বাংলা ভাষা চর্চার ও শিক্ষা দেয়ার জন্য স্থায়ীভাবে বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ভিয়েনা শহরে ৫টি বাংলাদেশি মসজিদ রয়েছে, যেখানে বাচ্চাদের আরবি শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা শিক্ষা দেয়া হয়। কিন্তু অভিভাবকরা বলেছে, বাংলা শিক্ষার জন্য এটি পর্যাপ্ত নয়। তবে বাংলা স্কুল করার জন্য ভিয়েনায় বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠনসহ বাংলাদেশ দূতাবাস চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভিয়েনার প্রবাসী বাংলাদেশিদের বড় সংগঠন বাংলাদেশ অস্ট্রিয়া সমিতি দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
শিগগিরই বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাষা শিক্ষার জন্য একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ভিয়েনার প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্থায়ী শহীদ মিনারের ব্যাপারে ভিয়েনাস্থ মিউনিসিপাল অফিস এবং বাংলাদেশ দূতাবাস বরাবর আবেদন করেছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান রাহাত বিন জামান বলেন, স্থায়ী শহীদ মিনারের ব্যাপারে ইতোমধ্যে ভিয়েনা মিউনিসিপাল অফিসের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং খুব দ্রুত ভিয়েনায় বাংলাদেশিরা একটি স্থায়ী শহীদ মিনার পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
Advertisement
দেশটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতীয় দিবসগুলো উদযাপন করে থাকে, যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিহাস, ভাষা এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে। ২০১০ সালের ২১ শে অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫তম সাধারণ অধিবেশনে ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ।
পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বাংলাদেশিরা মাতৃভাষার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে। বিদেশের মাটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং শহীদ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। কিন্তু নতুন প্রজন্মরা বাংলা ভাষা খুব ভালোভাবে শিখতে পারে না।
হাসান তামিম, ভিয়েনা অস্ট্রিয়া
Advertisement
এমআরএম/এমএস