রাজনীতি

গ্রহণযোগ্যতা পেতেই চা-চক্রের আয়োজন : মঈন খান

‘প্রহসনের সরকারকে’ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করতেই গণভবনে চা-চক্রের আয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

Advertisement

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। রোববার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মঈন খান বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। সেই সরকারের সত্যিকারের অবস্থান কোথায়- সেটা আমরা না জানলেও, সরকার কিন্তু ঠিকই জানে।’

তিনি বলেন, ‘জানে বলেই সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কীভাবে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া যায়। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই চা-চক্রের (গণভবনে) আয়োজন করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ এটাই বিশ্বাস করে।’

Advertisement

মঈন খান বলেন, এটা হচ্ছে প্রহসনের নির্বাচন, ভুয়া নির্বাচন। সেই ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটা দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। কার প্রতিনিধিত্ব করে সেটা আপনারাই বুঝে নিতে পারেন, আমার অধিকতর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, কয়েকজন রাষ্ট্রদূত প্রশ্ন করেছিলেন, বিএনপির নির্বাচিতরা কী সংসদে যাবেন। জবাবে বলেছি কেউ যদি নির্বাচিত হন তাহলে সংসদে যাবে না কেন? কিন্তু আপনারা (রাষ্ট্রদূত) কী জানেন না-বিএনপির পাঁচজনকে নির্বাচিত দেখানো হয়েছে। যাদের নির্বাচিত দেখানো হয়েছে তাদের সংসদে যাওয়ার কি রাইট রয়েছে- সেই প্রশ্নের জবাব পেলে নিশ্চয় বিএনপি সংসদে যাবে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আসলে নির্বাচনে কে বিজয়ী সেটা কোনো প্রশ্নই নয়। নির্বাচনে যাদের জয়ী দেখানো হয়েছে তারা জয়ী হয়েছেন, যাদের পরাজিত দেখানো হয়েছে তারা পরাজিত হয়েছেন এবং সেটা করা হয়েছে শুধু ভোট রিগিংয়ের মাধ্যমে নয়, করা হয়েছে সন্ত্রাসের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে জিজ্ঞাসা করুন, বলুন আপনারা বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি এটা কেমন নির্বাচন হয়েছে। তারা নিজেরাই উত্তর দেবে গোপনে, কানে কানে বলবে। প্রকাশ্যে বলবে না।

Advertisement

সরকারের সমালোচনা করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আজকে যত উন্নয়নের কথা বলা হোক না কেন, উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে। অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, এই নতুন সরকারের বয়স চার সপ্তাহ হয়েছে। সংসদ এখনো বসেনি। দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠক সম্ভবত হয়েছে। কিন্তু এ চার সপ্তাহে ১০-১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কীভাবে হলো, কারা নিল, কেন দায়িত্বে নিল? উত্তর হচ্ছে- মেগা প্রজেক্ট, মেগা দুর্নীতি।

দেশের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মঈন খান বলেন, যেখানে অলিখিত বাকশাল চলে সেখানে সুশাসন, মায়া-মমতা, হৃদয়ের বেদনার কথা বলে কোনো লাভ নেই। নির্যাতন করে কোটি কোটি মানুষকে হয়তো সাময়িকভাবে দমিয়ে রাখা যাবে কিন্তু দেশের মানুষকে চিরকালের জন্য কোনো অপশক্তি স্তব্ধ রাখতে পারবে না।

আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্মৃতি সংসদের শামীম তালুকদার, আলমগীর হোসেন, শাহিন খন্দকার, রেজাউল করীম রেজাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এএইচ/পিআর