৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে সেই নারীকে গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক পায়নি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
Advertisement
ধর্ষণের ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের এক সপ্তাহের মাথায় রোববার তথ্যানুসন্ধান কমিটির এমন প্রতিবেদন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক না থাকলেও ধর্ষণের অভিযোগের ‘প্রাথমিক সত্যতা’ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে ভিকটিমের মারপিট ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার কোনো সম্পর্ক তদন্ত কমিটির সামনে উন্মোচিত হয়নি। বরং ভিকটিমের স্বামীর দায়েরকৃত এজাহারের ভাষ্যমতে এটি আসামিদের সঙ্গে ভিকটিমের পরিবারের পূর্বশত্রুতার জের।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভিকটিম তদন্ত কমিটির সামনে দেয়া জবানবন্দির কোথাও বলেননি যে তিনি ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন বা তিনি ধানের শীষ প্রতীকের নেতা, কর্মী, সমর্থক বা আসামিরা ধানের শীষের বিপরীত দলের নেতা, কর্মী, সমর্থক বা পোলিং এজেন্ট।
Advertisement
এছাড়া ভিকটিমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ১৪ নম্বর ভোটকেন্দ্রে যান। তাকে নৌকায় ভোট দিতে বললে, তার ভোট তিনি দেবেন বলে জানান। তখন তারা বলে যে বিকাল বেলা খবর আছে। সোহেল বলে রাতে দেখা করবে। পরে সন্ধ্যার পর তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর রাত সাড়ে ১২টার পর মারপিট ও ধর্ষণের ঘটনা ওই নারীর জবানিতে তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।
এজাহার ও ভিকটিমের জবানবন্দির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোট দেয়ার কারণে তার ধর্ষণ ও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া বা আসামিদের আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া বা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী দ্বারা তার মারপিট ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় না।
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিকটিম ও তার স্বামীর জবানবন্দি, এজাহারের ভাষ্য এবং ইনজুরি সার্টিফিকেট ও প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট একত্রে বিশ্লেষণ করে এবং গাইনি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ভিকটিমকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
তবে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
Advertisement
আলোচিত এ মামলার এজাহারভুক্ত সাত আসামি হলেন মূলহোতা রুহুল আমিন, আসামি সালাউদ্দিন (৩৫), জসিম উদ্দিন ওরফে জইস্যা (৩৫), হাসান আলী ভুলু (৬০), সোহেল (৩৫), স্বপন (৩৫), বাদশা আলম বাসু (৪০) ও ইব্রাহিম খলিল বেছু।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিনগত রাতে ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। এর পর ঘটনাটি কাউকে না বলতে এবং মামলা না করতে হুমকি দিয়ে যায়।
এফএ/জেআইএম