আন্তর্জাতিক

হৃদস্পন্দন খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা, ৭২ ঘণ্টা পর জেগে উঠলেন তরুণী

বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হৃদস্পন্দন। নিথর দেহ পড়েছিল হাসপাতালে, প্রায় তিনদিন। তার পর আচমকাই জেগে উঠলেন তরুণী। চীনের পূর্ব ফুজিয়ান প্রদেশে সম্প্রতি এমন এক ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

২৬ বছর বয়সী ওই তরুণী এক সন্তানের মা। তবে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। চীনা সংবাদমাধ্যম বলছে, চলতি বছরের প্রথম দিন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণী। ওইদিন রাত ৮টার দিকে স্ত্রীকে পিঠে বয়ে জিয়ামেন ইউনিভার্সিটি অনুমোদিত একটি হাসপাতালে হাজির হন তার স্বামী।

তড়িঘড়ি শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু শত চেষ্টার পরও ওই তরুণীর হৃদস্পন্দন খুঁজে পায়নি চিকিৎসকরা। আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে ২০ মিনিট ধরে সিপিআর দেয়া হয়। তাতেও লাভ হয়নি। যার পর এক্সট্রা কর্পোরিয়েল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (ইসিএমও) প্রযুক্তির সাপোর্ট দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্র কাজ না করলেও যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখা যায়।

সেই অবস্থায় তিনদিন থাকলেও, পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, মারা গিয়েছেন ওই তরুণী। হাসপাতালে পড়ে ছিল তার নিথর দেহ। কিন্তু অল্পবয়সে একজন এভাবে চলে যাবে, তা মেনে নিতে পারেননি হাসপাতালেরই কয়েকজন চিকিৎসক। তাই চেষ্টা ছাড়েননি তারা। অবশেষে তাতেই কাজ দেয়।

Advertisement

৭২ ঘণ্টা পর হঠাৎ ওই তরুণীর হৃদযন্ত্র আংশিকভাবে কাজ করতে শুরু করে। তার পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। কথা বলতে না পারলেও, চোখ খোলেন তিনি। চিকিৎসায় সাড়া দেন। কোনো ধরনের কৃত্রিম সাহায্য ছাড়াই ৭ জানুয়ারি থেকে হৃদস্পন্দন সচল রয়েছে তার।

চিকিৎসকরা বলেছেন, এখন আর তুলে খাওয়াতে হচ্ছে না তাকে। তবে শারীরিকভাবে এখনও দুর্বল ওই তরুণী। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন না। হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।

কিন্তু হঠাৎ কী এমন হয়েছিল যে মাত্র ২৬ বছর বয়সে এমন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণী? হাসপাতালের চিকিৎসক জ্যাং মিনউই জানিয়েছেন, ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলিয়েশনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই তরুণী। এই রোগে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে কাঁপতে শুরু করেছিল হৃদপিণ্ড।

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাইয়োকারডিটিসও ধরা পড়েছে ওই তরুণীর। এর ফলে সংক্রমণের জেরে হৃদপিণ্ডের পেশিতে জ্বালা ধরে। তা থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আনন্দবাজার।

Advertisement

এসআইএস/এমকেএইচ