স্কুল থেকে টিফিন কিনে ফেরত পাওয়া টাকার মধ্যে একটি ‘ভুল’ কয়েন পেয়েছিলেন সে সময়ের কিশোর লুটস জুনিয়র। ৭২ বছর পর সেই ‘ভুল’ কয়েনই নিলামে বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ডলারে!
Advertisement
জানা গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৩ সালে আমেরিকার টাঁকশালে ভুলবশত ২০টা কয়েন তৈরি হয়। কারণ, সে সময় যুদ্ধসামগ্রী যেমন বোমা, টেলিফোনের তার তৈরিতে তামা বিপুলহারে ব্যবহৃত হত। তাই জোগান ঠিক রাখতে তামার ব্যবহার অন্যান্য খাতে যতটা সম্ভব কমানো হয়। তাই দস্তার প্রলেপ লাগানো স্টিলের কয়েন ছাপানো হত আমেরিকায়। সেই সময়েই টাঁকশালে ভুলবশত আব্রাহম লিংকনের ছবিযুক্ত ১ সেন্টের ২০টা তামার মুদ্রা তৈরি হয় এবং সেগুলো বাজারে চলেও যায়।
কিছু দিন পর গুজব ছড়ায়- এই লিঙ্কন (কয়েনের এক দিকে আব্রাহাম লিঙ্কনের ছবি থাকার জন্যই এই নাম) কয়েন ভুলবশত ছাপা হয়েছে এবং যে এই বিরল কয়েন ফেরত দেবেন ফোর্ড মোটর কোম্পানি তাকে ওই কয়েনের পরিবর্তে গাড়ি দেবে। ওই অফারের লোভে নকল তামার কয়েনে বাজার ছেয়ে যায়।
১৯৪৭ সালে এমনই একটা কয়েন পান ১৬ বছরের জন লুটস জুনিয়র। স্কুলের ক্যাফেটরিয়া থেকে খাবার কিনে টাকা ফেরত পেয়েছিল কিশোর জন। তার মধ্যেই একটা ছিল তামার লিঙ্কন কয়েন।
Advertisement
বিরল কয়েনের বিনিময়ে গাড়ি পাওয়ার খবর জনও পেয়েছিলেন। তখন ট্রেজারি এবং ফোর্ড মোটর কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন কয়েনের বদলে গাড়ি দেয়ার প্রস্তাব পুরোটাই গুজব। সবাই জনকে তখন বলেছিলেন, সেটি আসল লিঙ্কন কয়েন নয়। তা সত্ত্বেও কয়েনটা নিজের কাছেই রেখে দেন জন।
গত বছরের (২০১৮) সেপ্টেম্বরে মারা গেছেন জন। অবশ্য এর আগেই তিনি জেনেছিলেন তার কাছে থাকা কয়েনটি আসল লিংকন কয়েন। তাই নিজের অবর্তমানে যাতে এই বিরল কয়েন সঠিক জায়গায় পৌঁছায় সেজন্য মৃত্যুর আগে কয়েনটা বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। গত ১০ জানুয়ারি জনের ওই কয়েন নিলামে ওঠে।
নিলামে জনের সংগ্রহে থাকা ওই লিংকন কয়েন ২ লাখ ৪ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে। যা বাংলাদেশি প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার সমান। এর আগে ২০১০ সালে এমনই একটি কয়েনের নিলামে দাম উঠেছিল ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন পিটসফিল্ডে একটি লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জন। নিলামের অর্থ সেই লাইব্রেরির উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।
Advertisement
সূত্র : পিটিআই
এমএমজেড/এমএস