অনেকেই বলেন, বাংলাদেশ ওয়ানডেতে যত ভাল খেলে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে তত ভাল খেলতে পারে না। পরিসংখ্যানও সে সাক্ষীই দিচ্ছে এবং এমনটাই জানাচ্ছে।
Advertisement
টেস্টে দেশের মাটিতে দিনকে দিন একটু-আধটু উন্নতির চিহ্ন পাওয়া গেলেও টি-টোয়েন্টির পারফরমেন্সের গ্রাফ তেমন ওপরে উঠছে না।
উন্নতি কম হচ্ছে বলেই আগামী ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নিতে পারছে না বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবারও বাছাই পর্ব খেলে মূল পর্বে যেতে হচ্ছে টাইগারদের। টেস্টেও কাঙ্খিত উন্নতি হয়নি।
এই যে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কাঙ্খিত অগ্রগতি না হওয়া- বিসিবির কি এই অনুভব আছে? ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে উন্নতির চিন্তা কতটা আছে বোর্ডের? এমন প্রশ্ন কিন্তু আছে।
Advertisement
আজ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথা শুনে মনে হলো, বিসিবি আন্তরিকভাবেই চাচ্ছে, টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে উন্নতি ঘটাতে। আজ বেক্সিমকো অফিসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপে বিসিবি বিগ বস জানিয়ে দিলেন, ‘আমি মনে করি, ওয়ানডেতে আমরা খুব ভালো। কিন্তু টেস্টে কিছুটা এগুলেও, টি-টোয়েন্টিতে আমাদের ভালো করতে হবে। আশা করি দুই বছরের মধ্যে আমরা এই ফরম্যাটেও ভালো কিছু করতে পারবো।’
তার মূল্যায়ন, ‘সাফল্যের কথা বললে আমি বলবো ওয়ানডের কথা। দেশে বা বিদেশে আমরা এই ফরম্যাটে স্টেবল; কিন্তু অন্য দুই ফরম্যাটে আমরা পিছিয়ে আছি। সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো, দেশের মাটিতে আমরা বড় দলের সাথে টেস্টও জিতেছি। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আমরা এখনো ভঙ্গুর। এই ফরম্যাটে প্রতি ওভারেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এখানে আমাদের গ্যাপ আছে। দেখা যাচ্ছে, শুরু ভালো হলেও দ্রুত আমরা উইকেট হারিয়ে ফেলছি। যা আমাদের ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া আছে পাওয়ার প্লে; এইখানে আমাদের আরো ভালো করতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেখেন, ওদের সাত আট বা নয়ে ওদের ব্যাটসম্যানরা যতোটা ভালো করে, আমরা অতোটা পারি না। আমি মনে করি, ওয়ানডেতে আমরা খুব ভালো। ’
পাপনের মূল্যায়ন বিদায়ী বছরটি ভাল-মন্দে মিলে ভালই কেটেছে। তবে তার ধারনা, নতুন বছরটি বেশ কঠিন হবে। নানা চ্যালেঞ্জও সামলাতে হবে। কারণ, ২০১৯ সালে দেশের চেয়ে দেশের বাইরে বেশি খেলতে হবে। দেশের বাইরে ভাল খেলার তাগিদটাও ভিতরে অনুভব করেন পাপন।
‘দেখুন আমি বলবো ২০১৮ সাল ছিলো আমাদের জন্য ভালো একটি বছর। শুধু শেষটি ভালো হয়নি। এরপরেও আমি বলবো যে উইন্ডিজদের মতো শক্তিশালী একটি দলের সাথে টেস্ট এবং ওয়ানডেতে জিতেছি; কিন্তু আমরা টি-টোয়েন্টিতে হেরে গেছি। এরপরেও এটি ভালো ম্যাচ ছিলো এবং আমি মনে করি যে তারা আসলেই অনেক ভালো করেছে। ২০১৮ সাল নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। অবশ্য শুধু ২০১৮ সালই নয়, গত চার পাঁচ বছর ধরেই তারা যে পারফর্মেন্স করছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। একটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের দেশে এবং এই উপমহাদেশে আমরা যে কাউকে হারাতে পারি। এই বিশ্বাসটি এবং সামর্থ্যটি আমরা দেখাতে পেরেছি সবাইকে। তবে ধাপে ধাপে আপনাকে এগোতে হয়। সুতরাং পরবর্তী ধাপটি হলো সবথেকে কঠিন। আর সেটি হলো দেশের বাইরে। বাইরে বলতে, আপনি যখন কিনা ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা বা উইন্ডিজ- এই সমস্ত দেশে খেলতে যাবেন তখন অবশ্যই অনেক কঠিন হবে সেটা। অনেক কঠিন হবে এর কারণ কি? আমরা এই ধরণের কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত নই। আমরা যে কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত সেখানে আমরা পুরোপুরি ভিন্ন কন্ডিশন পাবো। ওটার সাথে আমরা যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারি তত ভালো। সেদিক থেকে আমি বলবো যে, ২০১৯ অত্যন্ত কঠিন হবে। শুধু তাই নয়, বাইরের সিরিজগুলো ছাড়াও আমাদের সামনে বিশ্বকাপ আছে। কিন্তু আমি মনে-প্রাণে এটা বিশ্বাস করি এবং ছেলেদের সাথে কথা বলে যেটি বুঝেছি যে তারাও বিশ্বাস করে- হারা জেতা জানি না, তবে এই যে বাইরে খেলাটা এটি করে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হবে আমাদের অবশ্যই সেটা সাহায্য করবে বাইরে ভালো করার জন্য।’
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস/এমএস