রাজনীতি

কী থাকছে ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে?

>> শীর্ষ নেতারা এখনই রাজপথে নামতে চাচ্ছেন না>> কর্মসূচি হবে ‘শান্তিপূর্ণ’ ও ‘নিরাপদ’ >> আদালতে রিট করা হতে পারে>> ইসিতে স্মারকলিপি আর অভিযোগই আপাতত>> হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি আসছে না

Advertisement

পুনঃনির্বাচনের দাবিতে বৃহস্পতিবার কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু কী কর্মসূচি আসছে? দেশের সবার মনে এখন প্রশ্ন- ২০১৪ সালের মতো লাগাতার অবরোধ কিংবা হরতালের মতো কিছু থাকছে নাতো।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন শীর্ষ নেতা জাগো নিউজকে বলেন, পুনঃনির্বাচনের দাবিতে আপাতত হরতালের মতো কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচনের পর জোটের একাধিক বৈঠকে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হলেও দলের সিনিয়র নেতাদের সিদ্ধান্ত এর বিপক্ষে ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন অজুহাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের প্রায় ৪৩ হাজারের বেশি কর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট জনগণের সমর্থন পেলেও হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যাবে না। কারণ এ ধরনের কর্মসূচিতে ‘বহিরাগতরা’ এসে নাশকতা করার সম্ভাবনা থাকে। এতে আরও নেতাকর্মী গ্রেফতার হবে। এছাড়া শীর্ষ নেতারা এখনই রাজপথে নামতে চাচ্ছেন না। আপাতত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ‘শান্তিপূর্ণ’ ও ‘নিরাপদ’ কর্মসূচি দেয়া হবে।

Advertisement

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ৯৩ দিনের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। বিএনপির নেতারা বলছেন, সেই আন্দোলনের শুরুর দিকে কয়েকটি বাসে পেট্রলবোমা মেরে বিএনপিকে বিতর্কিত করা হয়েছিল। খালেদাসহ শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হয়েছিল। তাই এবার কর্মসূচি দেয়ার বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে কর্মসূচি হরতাল হবে না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আপাতত ঐক্যফ্রন্টের একটাই কর্মসূচি, সেটি হচ্ছে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেয়া। এটি ছাড়া এখনও কোনো কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হয়নি। যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয়, গুলশান (বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়) থেকে জানানো হবে।’

ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের পরদিন সোমবার জোটের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে আপাতত কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। মূলত বৈঠকটিতে আলোচনা হয় নির্বাচনে জয়লাভ করা ঐক্যফ্রন্টের সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ নিয়ে। বৈঠকে সব নেতাই শপথ পাঠের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বর্তমানে কর্মসূচির চেয়ে জনসমর্থন বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তারা সারাদেশের যেসব কেন্দ্রে ভোট কারচুপি, এজেন্ট বের করে দেয়া, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে, সেগুলোর তালিকা তৈরি করে জনসম্মুখে প্রকাশ করবে। জনগণের সমর্থন নেবে। এরপর সুস্পষ্টভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দেবে। আপাতত এটি হবে তাদের প্রধান কর্মসূচি।

Advertisement

গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে উল্লেখ করে সেদিন সকালে নিজ বাসভবনে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, সারাদেশে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জেলায় জেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচি দেয়া হবে। আদালতে রিট করার বিষয়েও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

তবে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘ এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’

এআর/জেডএ/আরআইপি