জাতীয়

স্বপ্নযাত্রায় সারথি হবে তরুণরা

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে, আগামীতে আরো হবে। তরুণরাই দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে টেনে তুলেছেন। আগামীতে এ স্বপ্নযাত্রা চলমান রাখার সিদ্ধান্ত নেবে তারাই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণরাই বুঝিয়ে দেবে উন্নয়ন থামবে নাকি চলমান থাকবে।

Advertisement

শনিবার গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে বাংলাদেশ সমাবেশ আয়োজিত ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, ‘এ নির্বাচনে তরুণরা জানিয়ে দেবে দেশ আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছেছে। ত্যাগী আর জনপ্রিয়তায় যিনি তাকেই জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের সিদ্ধান্তের বিষয় জানিয়ে দেবেন।’

আলোচনায় অংশ নেয়া জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে পারলে আমরা বহুদূর এগিয়ে যেতে পারব। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র এগিয়ে নিয়ে সহনশীলতা চর্চা করতে হবে আমাদের সবাইকে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আরো যাব। সাম্প্রদায়িকতাতে রোধ করার জন্য সবচেয়ে বেশি জনসচেতনতা। আমরা বিশ্বাস করি দেশের মানুষ উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়ে এ ধারাকেই বেছে নেবেন।’

সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘কিছু তরুণ আফসোস করে বলে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। সেই তরুণদের আমি বলতে চাই, তোমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারনি দুঃখ করার কিছু নেই কারণ, তুমি যদি মানুষের সেবা করতে পার, জীবনের মান উন্নয়ন করতে পার তাহলেই আত্মতৃপ্তি সম্ভব।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘তোমাদেরই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজনৈতিক অপশক্তি রোষানল থেকে এদেশের তরুণদের রক্ষা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে রেখে অন্য আবর্জনা ফেলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদি স্বাধীনতার বিপক্ষে কোনো প্রার্থী বিজয়ী হয় তাহলে এটা হবে আমাদের নৈতিক পরাজয়। তাই দেশের মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক আলী শিকদার বলেন, ‘উন্নয়নের দিক থেকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আরো এগোতে হবে। দেশকে আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতিতে দেখতে না চাইলে নৌকার বিকল্প আর কিছু নেই।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাঙালিরা যেমন ভুল করেনি আগামীকালও তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে ভুল করবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।’

Advertisement

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঈদে যেভাবে রাজধানী ছেড়ে মানুষ গ্রামের বাড়ি যায় আগামীকালের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে মানুষ সেভাবে বাড়ি গেছে। সবার মধ্যে একটা উৎসব অনুভূতি বিরাজ করছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আগামীকালের নির্বাচনে সাধারণ মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই ভেবে যে, আলোর পথে অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে নাকি আমরা অন্ধকারের যুগে ফিরে যাব। আমাদের দেশের রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে আর দেশের স্বার্থে তরুণরাই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ দেখাতে।’

অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত বলেন, ‘আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমরা তাদেরই নির্বাচিত করব যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এসডিজি বাস্তবায়ন করবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করবে তাদেরই ভোট দেব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আগামীকাল জনগণ রায় দেবে উন্নত সমৃদ্ধি, আধুনিক বাংলাদেশ যারা গড়বে তাদের পক্ষেই।’

আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শাহরিয়ার কবীর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি হারুন হাবিব, অর্থনীতিবিদ খলিকুজ্জামান, ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম।

এ ছাড়া একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, এবি নিউজের প্রধান সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, সাংবাদিক নাসিমুন আরা মিনি, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল হান্নান, অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা প্রমুখ।

এএস/এমআরএম/জেআইএম