একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন। তবে সেটি একেবারেই একতরফা। সভা-সমাবেশ, শোডাউন আর গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন জয় প্রত্যাশী সরকার দলীয় প্রার্থী অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। অপরদিকে বিশিষ্ট তরুণ রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী পরিবারের একাধারে ভাগ্নে, জামাই ও সন্তান ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিভ রহমান পার্থের সমর্থকদের তেমন চোখে না পড়লেও তারা রাতে রাতে পোস্টার টানানো অব্যাহত রেখেন। মোটামুটি পর্দার আড়ালে থেকে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন ধানের শীষের সমর্থকরা।
Advertisement
অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী ছাড়াও কালাচাঁদপুর, সেনা অধ্যুষিত ঢাকা সেনানিবাস এলাকা ও ভাষানটেকের পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকা ঢাকা–১৭ আসনের অন্তর্ভূক্ত। এই আসনে এরশাদ, অভিনেতা ফারুক, আন্দালিব পার্থ ছাড়াও আছেন ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা। সময়ের বিতর্কিত ও আলোচিত এই রাজনীতিবিদ অবশ্য নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালচ্ছেন।
রোববার বনানী এলাকার ভোটার আমজাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অন্যন্য বারের নির্বাচনের মতো এ বছর প্রচার-প্রচারণা নেই। নির্বাচন হচ্ছে মনেই হয় না। মনে হচ্ছে এক দলীয় নির্বাচন।
সালাউদ্দিন নামে আরেক ভোটার বলেন, আন্দালিব পার্থ ইচ্ছে করেই প্রচারণা চালাচ্ছেন না। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা আমাদের নির্বাচনী এলাকায় নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাচ্ছেন, কই তাকে তো বাধা দিচ্ছে না। তার মতে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি-জামায়াত এই কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
Advertisement
নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে ঢাকা-১৭ আসনে বনানী ও গুলশান এলাকায় কোনো প্রার্থীর প্রচারণা না দেখা গেলেও গত কয়েক দিন যাবত সব প্রার্থীরই কিছু কিছু পোস্টার টাঙানো হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পোস্টার চোখে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের। তিনি নির্ভয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বেশকিছু এলাকায় ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও থাকছেন তার সঙ্গে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের সমর্থকরা এই আসনে সক্রিয়। এরশাদের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরাও তার অবর্তমানে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই ঢাকা-১৭ আসনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের দলও কোনো বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন না। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রচারণা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ভাষানটেক এলাকায়। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এরশাদ ঢাকা-১৭ আসনে জিতেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম মিয়া জানান, এই এলাকায় লাঙ্গলের প্রচুর ভোট রয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলে এখানকার চারটি কেন্দ্রেই এরশাদের লাঙ্গল প্রতীক জয়লাভ করবে।
ভাষানটেক এলাকার বেশ কিছু রাস্তার প্রবেশ পথে টাঙানো হয়েছিল আন্দালিভ রহমানের ধানের শীষের পোস্টার। তবে কে বা কারা ওই পোস্টারগুলো রাতের আঁধারে ছিঁড়েও ফেলেছে। পরে সেসব স্থানে আর তার পোস্টার লাগানো হয়নি।
Advertisement
এদিকে ব্যপকভাবে না হলেও ঢাকা-১৭ আসনের বেশ কয়েকটি এলাকায় লিফলেট বিতরণ করছেন বর্তমান সাংসদ বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ। তবে সাংসদ হলেও তিনি এলাকায় আলোচনায় আসার মতো পরিচিত না। এলাকাবাসীর মতে, বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না আসায় একরকম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সিংহ প্রতিকের কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি গুলশান-বনানী এলাকায়। নির্বাচনে প্রচারণা ও পরিবেশ সম্পর্কে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। পরিবেশ নেই- এমনটি কেউ বলে থাকলে সেটি সত্য না। আমি প্রচারণা চালাচ্ছি, কই কোনো বাধা তো আসছে না।
আরএম/এমএমজেড/এমএস