ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়ত বলেছেন, তার দেশে যুদ্ধক্ষেত্রটা এখনও মেয়েদের জন্য নয়। যুদ্ধে নামার ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে শুরু করে নানা অসুবিধা রয়েছে নারীদের। শুধু তাই নয়, রণক্ষেত্রে নারীদের কম্যান্ডিং অফিসার হিসেবে মেনে নেয়ার ব্যাপারে জওয়ানরাও ততটা প্রস্তুত নন।
Advertisement
দেশটির একটি গণমাধ্যমকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
জেনারেল রাওয়ত বলেন, ‘যুদ্ধে গিয়ে যদি কোনও নারি অফিসার মারা যান আর তার যদি সন্তান থাকে, তাহলে ভাবুন তো সেই সংসারটার কী দশা হবে! সেটা তো ভেসে যাবে। তাছাড়া, যুদ্ধক্ষেত্রে নারী অফিসারদের জামাকাপড় বদলানোর সময় যদি কোনও জওয়ান উঁকিঝুঁকি মারে, তা হলে তো আরও বিপদ! তখন কর্তৃপক্ষের কাছে নারী অফিসারদের বারবার নালিশ ঠুকতে হবে। দায়িত্বের প্রয়োজনে কোনও কম্যান্ডিং অফিসারকে মাতৃত্বের ছুটি না দেয়া হলে হইচই হবে।’
ভারতের সেনাপ্রধান মনে করেন, নারীদের সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো, মাতৃত্বকালীন ছুটি বা মেটারনিটি লিভ। সেনাবাহিনীর নারী অফিসারদের সেই টানা ছয় মাসের ছুটি দেয়াটাও অসুবিধা।
Advertisement
তার কথায়, ‘সেনাবাহিনীর জওয়ানদের বেশির ভাগই আসেন গ্রাম থেকে। দূর-দূরান্তের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। রণক্ষেত্রে কোনও মহিলা অফিসার সামনে থাকলে, জওয়ানরা কি তার কম্যান্ড মেনে নিতে চাইবেন? নারী অফিসারদের কম্যান্ড মেনে যুদ্ধে লড়বেন? চেয়েছিলাম, মহিলাদের যুদ্ধে পাঠাতে। কিন্তু এসব সাতসতের ভাবতেই হয়েছে আমাদের।’
সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যে দেশটিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রণক্ষেত্রে নারী অফিসারদের জামাকাপড় বদলানোর সময় জওয়ানদের উঁকিঝুঁকি মারার আশঙ্কা প্রকাশ করে জেনারেল রাওয়ত স্পষ্ট করে দিলেন, এ ব্যাপারে বাহিনীর আইনকানুনে হয়তো কোথাও শিথিলতা রয়েছে, যা তার প্রশাসনিক দুর্বলতারই পরিচয় দিল।
তাদের প্রশ্ন, নারী অফিসারদের কম্যান্ড গ্রাম থেকে আসা জওয়ানরা মেনে নিতে চাইবেন না, একজন সেনাপ্রধান হয়ে এটা বলেন কীভাবে জেনারেল রাওয়ত? সেনাবাহিনীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কম্যান্ড মানতে না চাইলে জওয়ান, অফিসারদের কোর্ট মার্শাল করা হয়। জেনারেল রাওয়তের এই মন্তব্য কি বাহিনীর প্রশাসনে দুর্বলতারই আরও একটি ইঙ্গিত?
সূত্র : আনন্দবাজার
Advertisement
জেডএ/জেআইএম