একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মনসুর বলেছেন, জয় বাংলা স্লোগান, বঙ্গবন্ধু ও মুজিব কোট একক কোনো দলের নয়, একটি রাজনৈতিক দল দলীয় স্বার্থে সেগুলো ব্যবহার করে থাকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেছিলেন। জয় বাংলা স্লোগান, বঙ্গবন্ধু ও মুজিব কোট কারও ব্যক্তিগত সম্পদ নয়।
Advertisement
শনিবার বিকেল ৫টার দিকে কুলাউড়া পৌর শহরের বিছরাকান্দি এলাকায় একটি বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সম্প্রতি তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সুলতান মনসুর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সবার স্লোগান ছিল জয় বাংলা। ৭১ এর সময় কারও সঙ্গে দেখা হলে ‘জয় বাংলা’ বলে হাত মেলানো হতো। তাই জয় বাংলা স্লোগান রণধ্বনি। তবে জয় বাংলা স্লোগান প্রথমে ছাত্রলীগ পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। মুজিব কোট যে কেউ পরতে পারে। আমি মুজিব কোট পরবো, কিংবা পরবো না সেটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। কেউ আমাকে বলে মুজিব কোট পরাতে বা খুলাতে পারবে না।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, গত ৫ বছর ধরে ভোটারবিহীন নির্বাচনের সরকার দেশ চালাচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। বাকস্বাধীনতা নেই। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আবার টাকা পাচারকারীদের দলীয় মনোনয়নও দেয়া হচ্ছে। দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। মানুষ এই অবস্থার পরিবর্তন চায়।
Advertisement
তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় জনগণের সচেতনতা প্রয়োজন। তাই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র রক্ষা করা হবে।
সুলতান মনসুর বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এ আসনে (মৌলভীবাজার-২) আমাকে একক প্রার্থী মনোনীত করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এরপর ১২টি বছর কেটে গেছে। ওই সময়ে রাজনৈতিকভাবে কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ পাইনি কিংবা দেয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলেও যোগ দেইনি। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি।
স্থানীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে এই ১২টি বছর প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় থাকিনি কারণ এখানে (কুলাউড়া) রাজনীতিতে আমি সক্রিয় থাকলে রাজনৈতিক কোন্দল সৃষ্টি হতো। সেটি আমি চাইনি।
দেশে একটি গোষ্ঠী বা ব্যক্তির শাসন চলছে উল্লেখ করে সুলতান মনসুর বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতা নেই। বিরোধীমত ও পথের কোনো মানুষই আজ নিরাপদে নেই। গত ২২ সেপ্টেম্বরে আমাদের জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডিসহ ২০ দলীয় জোট একত্র হয়েছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলনে।
Advertisement
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির (জামায়াত) সঙ্গে ঐক্য করা হয়েছে- এমন কথার জবাবে সুলতান মনসুর বলেন, বাংলাদেশের কোনো ভোটার স্বাধীনতাবিরোধী নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী হতে পারে, স্বাধীনতা বিরোধী নয়।
মতবিনিময় সভায় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাছ খান, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এন এম আবেদ রাজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিপন দে/আরএআর/জেআইএম