জালিয়াতির দায়ে চার বাংলাদেশিসহ মোট পাঁচজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আদালত। জালিয়াতির মাধ্যমে ব্রিটিশ ভিসা পাইয়ে দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার পাউন্ডের কর ফেরত (ট্যাক্স রিপেমেন্ট) সুবিধা নেয়ার অভিযোগে শুক্রবার লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্ট এ সাজা দেন।
Advertisement
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আবুল কালাম মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে (৪২) সাড়ে ১০ বছর, এনামুল করিমকে (৩৪) নয় বছর চার মাস, কাজী বরকত উল্লাহকে (৩৯) পাঁচ বছর ১০ মাস, তমিজ উদ্দিনকে (৪৭) আড়াই বছর এবং জলপা ত্রিভাদিকে (৪১) তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জলপা ত্রিভাদি ছাড়া অন্যরা বাংলাদেশি। এই চক্রের মূল হোতা আবুল কালাম মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এনামুল করিম তার শ্যালক।
শুক্রবার সাজা ঘোষণার সময় শুধু তমিজ উদ্দিন ও জলপা ত্রিভাদি উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বলে ধারণা। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে।
Advertisement
আদালতের শুনানির বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জালিয়াতি ও প্রতারণা ঘটায় এই চক্র। তারা ‘টিয়ার ১’ রুটে ভিসা পাইয়ে দিতে আবেদনকারীদের কাছে জাল কাগজপত্র বিক্রি করতেন। এ কাজে তারা ৭৯টি কোম্পানি খোলেন। এই চক্রের সরবরাহ করা কাগজপত্র দিয়ে অন্তত ৯০০ মানুষ ভিসার জন্য আবেদন করেন, যাদের প্রায় সবাই বাংলাদেশি।
এ ছাড়া তারা প্রতারণার মাধ্যমে ১ লাখ ৭২ হাজার পাউন্ডের কর ফেরত সুবিধা আদায় করেছেন। ২০১১ সালে ব্রিটিশ অভিবাসন বিভাগ ‘টিয়ার ১’ ভিসার বেশ কিছু আবেদনে একই রকম প্রবণতা লক্ষ্য করে বিষয়টিতে অনুসন্ধানে নামে।
যুক্তরাজ্যের রাজস্ব বিভাগ (এইচএমআরসি) বলছে, ছয় বছরে এই চক্র কর ফেরত সুবিধা বাবদ ১ কোটি ১৩ লাখ পাউন্ড হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে।
বিচারক মার্টিন গ্রিফিন বলেন, ‘এদের উদ্দেশ্য ছিল অভিবাসন বিভাগকে (হোম অফিস) বোকা বানিয়ে ভিসা পাইয়ে দেয়া এবং সেটি কাজ করেছে।’
Advertisement
সরকারি কৌঁসুলি জুলিয়ান ক্রিস্টোফার বলেন, এই জালিয়াত চক্রের দেয়া কাগজপত্রে মোট ১৮ জন ভিসা পেয়েছেন, যাদের তিনজন ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন এবং দুজন স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। ৩৫ সপ্তাহের শুনানি শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
এমআরএম/জেআইএম