আন্তর্জাতিক

১৭ মিনিটে বাবরি ভেঙেছি, এবার দিল্লি মসজিদ : শিবসেনার হুমকি

ভারতের ঐতিহাসিক দিল্লি জামে মসজিদ ভাঙার দাবি তুলেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা সচ্চিদানন্দ হরি সাক্ষী মহারাজ এমপি। শুক্রবার এক সভায় তিনি এ দাবি জানান।

Advertisement

সাক্ষী মহারাজ বলেন, ‘আমি প্রথম রাজনীতিতে আসার পর মথুরায় বলেছিলাম, অযোধ্যা, মথুরা, কাশীর দরকার নেই, দিল্লির জামে মসজিদ ভাঙো। সিঁড়ির নিচে যদি মূর্তি না পাওয়া যায় তাহলে আমাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিও। ওই বক্তব্যে আমি অটল রয়েছি।’

তার দাবি, মুঘল আমলে মন্দির ভেঙে তিন হাজারেরও বেশি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মুঘল সম্রাট শাহজাহান ১৬৪৪ থেকে ১৬৫৬ সালের মধ্যে দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।

অন্যদিকে, শুক্রবার ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের সংগঠন শিবসেনার মহারাষ্ট্রের নেতা সঞ্জয় রাউত বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা ১৭ মিনিটের মধ্যে বাবরি মসজিদ ভেঙেছি, (রাম মন্দির নির্মাণের জন্য) আইন তৈরি করতে কত সময় লাগে?’

Advertisement

আরও পড়ুন : থানে ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহার করতে গিয়ে এসআই’র ধর্ষণের শিকার

শিবসেনার এই নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত বিজেপির সরকার রয়েছে। রাজ্যসভায় (সংসদের উচ্চকক্ষ) এমন অনেক এমপি আছেন যারা রাম মন্দিরের পাশে দাঁড়াবেন। যারা বিরোধিতা করবেন দেশে তাদের ঘুরে বেড়ানো মুশকিল হবে।’

শুক্রবার শিবসেনার দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় বিজেপি’র তীব্র সমালোচনা করে বলা হয়, ‘ক্ষমতাসীন লোকদের শিবসৈনিকদের নিয়ে গর্ব হওয়া উচিত; যারা রাম জন্মভূমিতে বাবর রাজকে শেষ করে দিয়েছে।’

দলটি বলেছে, ‘অযোধ্যায় এখন রাম রাজত্ব নয়, সুপ্রিম কোর্টের রাজত্ব। ১৯৯২ সালে বালা সাহেবের (প্রয়াত শিবসেনা প্রধান) শিব সৈনিকরা রাম জন্মভূমিতে বাবরের রাজত্বকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ক্ষমতাসীনরা (বিজেপি) ওই শিব সৈনিকদের বিষয়ে গর্ব করার পরিবর্তে তাদের থেকে ভয় অনুভব করছে। আপনারা মন্দির নির্মাণের তারিখ কেন ঘোষণা করছেন না? যদি রাম মন্দির ইস্যু আপনাদের হাত থেকে ফসকে যায় তাহলে ২০১৯ সালে আপনাদের রুটিরুজি ছাড়াও কিছু লোকের মুখও বন্ধ হয়ে যাবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন : খালে তলিয়ে গেল বাস, নিহত ২৫

২৫ নভেম্বর অযোধ্যার প্রস্তাবিত ধর্মসভায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দলসহ বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শামিল হবে। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেও ওইদিন অযোধ্যায় যাবেন। দুই লাখেরও বেশি মানুষ ধর্মসভায় উপস্থিত হবেন বলা দাবি করা হয়েছে।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ ভাঙার ২৬ বছর পরে এই প্রথম অযোধ্যায় একসঙ্গে এত মানুষ জড়ো হতে চলেছেন। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও সংখ্যালঘু মুসলিমদের একাংশ গোলযোগের আশঙ্কায় সাময়িকভাবে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

বাবরি মসজিদ মামলার বাদী ইকবাল আনসারী বলেন, আরএসএসের ধর্মসংসদকে কেন্দ্র করে অযোধ্যার মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিমদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তিনি জেলাপ্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান। পার্সট্যুডে।

এসআইএস/জেআইএম