পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কৃষক, শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় লড়াই করা বাম রাজনৈতিক দলের প্রধান উদ্দেশ্য হলেও বাংলাদেশের বাম দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে সেই নীতি নেই। মূল নীতি থেকে সরে গিয়ে বাম দলগুলো এখন শুধু চেহারায় আছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
Advertisement
রুশ বিপ্লবের ১০১তম বার্ষিকী উপলক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও মতাদর্শগত বিভাগ পরিচালিত ‘পার্টি স্কুল’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। রোববার সন্ধ্যায় ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অক্টোবর বিপ্লব ও বাংলাদেশ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন শরীফ শমশির। তিনি বলেন, পানির ওপর বরফ জমলে, যেমন নিচের পানি দেখা যায় না। আমাদের দেশের বাম দালগুলোরও ঠিক তেমনই অবস্থা। বাম দলগুলো তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে গেছে। বাম দলগুলো এখন শুধু চেহারায় আছে।
তিনি বলেন, এক জায়গায় যদি দশজন কমরেড হাতমেলান তাদের মধ্যে মিল পাওয়া যাবে না। দশজন কমরেডের দশ রকম দল। এক একজনের এক এক মতবাদ।
Advertisement
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর বিপ্লবের মূল দর্শন ও লক্ষ্য থেকে সরে গেলে বিশ্বে যে বৈষম্য মূলক পুঁজিবাদি ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে দেশে রুশ বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে একটা সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজের জন্য রুশ বিপ্লবের শিক্ষা বিশ্বের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ভিন্নতর না।’
ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য সুশান্ত দাসের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম চৌধুরী।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশ সমস্ত অর্জনগুলো বিসর্জন দেবে কি না তা নির্ধারণ হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বচনের মাধ্যমে। কাজেই এই সময়ে মহাজোট গঠন করে ১৪ দলীয় ঐক্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ওয়ার্কার্স পার্টি একসঙ্গে লড়ায়ের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক।’
Advertisement
এ সময় বর্তমান সরকারের কিছুটা সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের অন্যতম ছিল সমাজতন্ত্র। আজ ক্ষমতাসীন দল সমাজতন্ত্রকে ভাসুরের নাম মনে করে, তারা সমাজতন্ত্রের নাম মুখে আনে না। আমি শেখ হাসিনার মুখে, আওয়ামী লীগের কোনো নেতার মুখে সমাজতন্ত্রের কথা শুনিনি। দেশে ধনী ও গরিবের বৈষ্যম ক্রমেই বাড়ছে।’
এমএএস/এনডিএস/জেআইএম