আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের মতো রাঙ্গামাটি ২৯৯ নম্বর আসনে ভোটের জন্য প্রস্তুত সব রাজনৈতিক দল। তবে এখন পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান জানান দেননি পার্বত্য অঞ্চলের অন্যতম স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।
Advertisement
এবার ২৯৯ নম্বর আসনে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগ থেকে একজন, বিএনপি থেকে আটজন এবং অন্যান্য সংগঠন থেকে চারজন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।
এ আসনে ১৯৯১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন দীপংকর তালুকদার। এবারও নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তিনি। তবে এবার তার সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত বিএনপির আট প্রার্থী।
এ আসন থেকে ৫ বার নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনবার জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দীপংকর তালুকদার। ২০০১ সালে নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন এবং ২০০৮ সালে আবারও জয়ী হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
Advertisement
দল তাকে এবারও মনোনয়ন দেবে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে দীপংকর তালুকদার বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে আমরা গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি। আশা করছি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।
তবে এবার তার সঙ্গে লড়তে বিএনপির আটজন নেতা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন- সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ান, উপজাতিবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) মনিষ দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহ আলম, সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভূট্টো, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সদর বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পনির এবং কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন। তাদের মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দীপেন দেওয়ান দীপু।
মনোনয়ন সংগ্রহকারী জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহ আলম বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে এ বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। তাই আমাকে মূল্যায়ন করবে দল। যদি মনোনয়ন পাই তাহলে এ আসনটি আমি বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে পারব। যদি অন্য কাউকে দল মনোনয়ন দেয় তার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করব।
তবে স্থানীয় বিএনপি নেতকর্মীরা বলছেন, বিএনপির চমক হলো মনিস্বপন দেওয়ান। কারণ আবারও ভোটের মাঠে নেমেছেন তিনি। মনিস্বপন মাঠে নামা মানেই এখানে বিএনপির জয় নিশ্চিত। এ আসন থেকে মনিস্বপন মনোনয়ন পাবেন এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে লড়ে জয়ী হবেন এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের।
Advertisement
জানা যায়, ২০০১ সালে হঠাৎ এসে বিএনপিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মনিস্বপন। তবে উপমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২০০৬ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপিতে যোগ দেন তিনি। এক-এগারো সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলডিপি থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান মনিস্বপন দেওয়ান। দীর্ঘ ১০ বছর পর তিনি আবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। ইতোমধ্যে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় সদস্য পদ দিয়ে তার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা এগিয়ে রেখেছে বিএনপি।
এছাড়া একই আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন- বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জুঁই চাকমা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জসিম উদ্দিন এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী শান্তি দেব চাকমা এবং সচিব চাকমা।
তবে এখনো নিশ্চুপ পাহাড়ের অন্যতম রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ দলের প্রার্থী ঊষাতন তালুকদার আওয়ামী লীগের প্রার্থী দীপংকর তালুকদারকে প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে এবার তাদের প্রার্থী হিসেবে কে নির্বাচনে লড়বেন তা জানানো হয়নি। এমনকি এখনও মনোনয়ন নেননি কেউ।
এএম/এমএস