আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর রাখছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বিজয় নিশ্চিতের পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে অপেক্ষাকৃত কম বিতর্কিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করছেন তারা।
Advertisement
এমনকী বিতর্কিত ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যাতে মনোনয়ন দেয়া না হয়, সে জন্য হস্তক্ষেপও করবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা- জাগো নিউজকে এমনটি জানিয়েছেন জোটের একাধিক নেতা।
ভারসাম্যের রাজনীতি আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা নিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনর নেতৃত্বে সম্প্রতি জোটভুক্ত হয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলসহ আরও কয়েকটি দল। গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠায় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফা দাবি আর ১১ দফা লক্ষ্য নিয়ে সংলাপের আহ্বান জানায়। দু’দফা সংলাপে বসলেও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, তাদের তেমন কোনো দাবি মেনে নেয়নি সরকার।
তবে দাবি না মানলেও এখন পুরোদস্তুর নির্বাচনমুখী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে আর বিএনপির জনসমর্থনে ভর করে ভোটার হাওয়া যেন ঝড়ে রূপ নিচ্ছে এ শিবিরে। নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এখন মনোনয়নের হাট বসেছে। শত শত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হচ্ছে ধানের শীষ প্রতীকে।
Advertisement
মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত জোটের অন্য শরিকরাও। তবে বিএনপির প্রার্থীর ব্যাপারেই নজরদারি একটু বেশি। জোটের হয়ে ২০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারে বিএনপি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে জোট করেছি। দুঃশাসনের পতন ঘটিয়ে অবশ্যই ফের দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা পাক, তা কেউ চাইবে না। নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা বেশ সতর্ক। প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে চাই না। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি মনোনয়ন পাক, সেটা আমরা চাই না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জয়। সে জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে আমরা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করছি। আলোচনা অব্যাহত থাকবে। বিতর্কিতদের এড়িয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা স্বৈরশাসকের পতন ঘটাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। মানুষ পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে। মানুষের আবেগ ধারণ করেই আমাদের পথচলা। জনগণ যার প্রতি ভরসা পাবে আমরা তাকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে লড়াই করবো।’
Advertisement
এর আগে রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা যতগুলো দল মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি, তারা সবাই একটি কমন প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নেব। সেই কমন প্রতীক হবে ধানের শীষ।’
আসন বণ্টন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে এ বিষয়ে আলোচনার যাত্রা শুরু করেছি।’
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন হচ্ছে আন্দোলনের অংশ। নির্বাচন বয়কট করতে বাধ্য করবে না সরকার- এমনটি আশা করছি। তবে সরকার নির্বাচন ঘিরে অতিমাত্রায় আগ্রাসী হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জোটের মধ্যে আলোচনা চলছে। সবার পরামর্শ নিয়েই আমরা প্রার্থী বাছাই করব।’
এএসএস/এমএআর/বিএ