গণমাধ্যম

অযত্নে ধুলা জমেছে সাগর রুনির কবরে

কবর দুটির নামফলকের দুই একটি অক্ষর মুছে গেছে। শ্বেত পাথরের টাইলসেও ধুলা জমেছে। কবরের ওপর পড়ে আছে ঝরা পাতা। শিয়রের পাশের সেই ছোট্ট গাছটি ডালপালা মেলে বেশ বড় হয়েছে। শিয়রের কাছে রাস্তায় দাঁড়াতেই কবরের পাশ দিয়ে দ্রুতবেগে দুটি বেজি দৌড়ে চলে গেল।

Advertisement

আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানে পাশাপাশি দুটি কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। নিজ বাসায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার এ সাংবাদিক দম্পতির কবরটি এক সময় বেশ যত্ন নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও সময়ের পরিক্রমায় ‘অযত্ন অবহেলার’ ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

‘আপনারা কী কবরস্থানের স্টাফ, সাংবাদিক সাগর-রুনির কবর দুটি কোথায় বলতে পারেন?’ পড়ন্ত বিকেলে এ প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে কবরস্থানের দুই কর্মচারী লজ্জিত হয়ে বলেন, ‘স্যার, ঠিক কইতে পারুম না।’

কর্মচারীদের একজন উচ্চস্বরে সহকর্মী আরেক বৃদ্ধ এক কর্মচারীকে ডেকে আনলে তিনি নুরানী মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে দূরে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে দূরে তিন লাইন পরে লম্বা গাছটি দেখছেন ওখানে গিয়ে দেখেন।’

Advertisement

সময়ের পরিক্রমায় অন্যান্য সবার মতো আজিমপুর কবরস্থানের কর্মচারীরাও সাগর রুনির কবরটির অবস্থান ভুলতে বসেছে। অথচ হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকমাস কবরস্থানের যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে চোখ বন্ধ করে কবর দুটির অবস্থান জানিয়ে দিত। চোখের আড়াল হলে মনেরও আড়াল হয় প্রবাদের সত্যতা মেলে সাগর রুনির ক্ষেত্রেও।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। পরে তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, তদন্তে ‘প্রণিধানযোগ্য’ অগ্রগতি হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর ডিএনএ পরীক্ষায় রহস্য উদঘাটন হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় পৌনে ছয় বছর পার হলেও এখনও অজানায় রয়েছে হত্যা রহস্য।

এমইউ/এএইচ/আরআইপি

Advertisement