বিশ্বের জনসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এদিকে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান এ চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের বড় বড় সব শহর। আর এর কারণে বাড়ছে যানজট। বিশেষ করে রোগীরা পড়ছেন বিপদে। সংকটাপন্ন অবস্থাতেও যানজটের কারণে হাসপাতালে নিতে না পারায় রাস্তাতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। তবে এবার এ সমস্যার সমাধান করতে আসছে অ্যাম্বুসাইকেল। আর অ্যাম্বুসাইকলে নামের এই পদ্ধতিটি উদ্ভব ইসরায়েলের হাত ধরে।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসে পাওয়া গেছে এমন এক সংবাদ। ইসরায়েলের নাজ ডেইলির বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এলি বিয়ার নামের এক ব্যক্তি তৈরি করেছেন অ্যাম্বুসাইকলে নামের এই পদ্ধতি। আর এ পদ্ধতির মূলত কাজ করছে জেরুজালেমভিত্তিক জরুরি চিকিৎসা সেবাদানকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড হাতজালাহ অব ইসরায়েল।
তবে সত্যিকার অর্থে এলি বিয়ারের এই অ্যাম্বুসাইকেল শুধু একটি অ্যাম্বুলেন্স নয়, এখানে থাকবে প্রয়োজনীয় সব জরুরি মেডিকেল সেবা সামগ্রী। এর মাধ্যমে শংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে থাকা রোগীদের প্যারামেডিক্সদের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে।
যানযটের কারণে প্রতিনিয়ত যেসব প্রাণ ঝরে যাচ্ছে রাস্তায় সেসব মানুষকে বাঁচাতে সহায়ক হবে এই অ্যাম্বুসাইকেল। সচরাচর প্যারামেডিক্সদের (জরুরি চিকিৎসা সেবাদানকারী) মাধ্যমে বড় অ্যাম্বুলেন্সে করে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। কিন্তু এখন এই অ্যাম্বুসাইকেলের মাধ্যমে খুব দ্রুত সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারবে তারা।
Advertisement
আর এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতির কারণে অ্যাম্বুসাইকেল হবে বর্তমানে যানজটের শহরে স্বাস্থ্য সেবার সবচেয়ে বড় সমাধান। যদিও ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এ বছর মোটর অ্যাম্বুসাইকেল তৈরি শুরু হয়েছে কিন্তু এলির অ্যাম্বুসাইকেলের সঙ্গে অনেক পার্থক্য রয়েছে সেটার। কেননা এলি একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে অ্যাম্বুসাইকেলটি বানিয়েছে। যা অন্যগুলোর তুলনায় বেশ উপযোগী। এই অ্যাম্বুসাইকলের জন্য থাকবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিছু স্বেচ্ছাসেবক। যাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অ্যাম্বুসাইকেল চালানো শেখানো হচ্ছে। এছাড়া তাদেরকে তিন মাসের প্যারমেডিকেল কোর্সেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
একবার এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ হলে স্বেচ্ছাসেবকরা রোগীদের সেবা দিতে পারবে। যখনই কোনো রোগীর এই জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হবে মাত্র একটি ফোন কলের মাধ্যমে তার দুয়ারে সেবা দিতে পৌঁছে যাবে স্বেচ্ছাসেবক। আর কোনো রোগীর সর্বোচ্চ তিনবার ফোনে সেটা রিসিভ করতে বাধ্য থাকবে তারা।
দ্বিতীয় ধাপটি হলো, এই প্রক্রিয়ায় রোগীর ফোন কল পাওয়া মাত্রই রোগীর যে স্থানে আছেন তার ঠিকানা চিহ্নিত করে তার আশপাশে থাকা কোনো অ্যাম্বুসাইকেলকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হবে। অ্যাম্বুসাইকেলের চালক নির্দেশ পাওয়ামাত্রই রোগীর ঠিকানায় খুব দ্রুত পৌঁছে যাবে। সেখানে যাওয়ার পর প্যারামেডিকেল বিষয়ে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকরা ওই রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করতে এলির স্বতন্ত্র পদ্ধতির সময় লাগবে মাত্র তিন মিনিট।
এলি বিশ্বাস করে সামাজিক মর্যাদা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও জাতি ইত্যাদি কোনো কিছু বিবেচনায় না নিয়ে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া হবে। এলির এটা ভেবে গর্ব হচ্ছে যে, তার অ্যাম্বুলেন্স কার্যক্রম জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য একটা সাধারণ ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করবে। যা অনেকের প্রাণ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Advertisement
এসএ/এমএস