ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় অভাবের তাড়নায় ছয়দিনের এক পুত্র শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছেন দুলাল নামের এক বাবা। এ নিয়ে কাঁদছেন শিশুর মা। সেইসঙ্গে সন্তান বিক্রির পর দুলালের স্ত্রী রওশন আরা বাবার বাড়ি চলে যান।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জোরবাড়ীয়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী দুলাল মিয়ার প্রথম স্ত্রী নাজমা খাতুন ৮ বছর আগে ইব্রাহিম মিয়া ও রানা হোসেন নামের দুই ছেলে রেখে মারা যান।
প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পাশের গ্রামের রওশন আরাকে ৭ বছর আগে বিয়ে করেন দুলাল। দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরার ঘরে শান্তা (৭), সিয়াম (৩), সানজিদা (২) সিফাত (দেড় বছর) নামের চার সন্তান রয়েছে।
২১ দিন আগে রওশন আরা আরও একটি সন্তান জন্ম দেন। পরে সন্তানকে অভাবের সংসারে লালন-পালন করতে পারবেন না বলে ছয়দিনের মাথায় ঢাকার এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেন বাবা।
Advertisement
মা রওশন আরা বলেন, আমাদের সংসারে অভাব। স্বামী পঙ্গু। আরও চারটি শিশু সন্তান রয়েছে। প্রতিবেশী আব্দুর রউফ আমাদেরকে একটি নতুন ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা বলে ছয়দিনের শিশুকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেন। আব্দুর রউফের ছেলে রকিব ওই লোকের বাসায় থেকে মাদরাসায় লেখাপড়া করে। আমরা শুনেছি ছেলে নাকি ভালো আছে। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
এ বিষয়ে বাবা দুলাল বলেন, আমি অভাবী মানুষ। থাকার মতো আমার কোনো ঘর নাই। এতগুলো সন্তান নিয়ে আমি কোথায় যাব, কোথায় থাকব, কী খাওয়াবো। আমার ছোট পোলারে যে নিছে হেরে আমরা চিনি না। আব্দুর রউফ সব জানে। ঘর করে দেবে বলে আমার সন্তানকে নিয়ে গেছে। ছেলে নিয়ে একটি নতুন ঘর নির্মাণ করে দেবে বলেছে রউফ। ছেলের পরিবর্তে ২০ হাজার টাকা দেবে বলেও দেয়নি।
দুলালের ভাই আব্দুল মজিদ বলেন, ২০ হাজার টাকা ও নতুন করে একটি ঘর নির্মাণ করে দেবে বলে শুনেছি। আব্দুর রউফ বলেছে, টাকা নিলে ঘর দেবে না। এ কারণে তারা টাকা নেয়নি। কিন্তু এখনো ঘর করে দেয়নি রউফ।
এএম/এমএস
Advertisement