৩০ বছর আগে নদী ভাঙনে সব হারিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ব্যাপারী ওরফে আনু ব্যাপারী (৭১)। কিন্তু থেমে যাননি। যুদ্ধের দু’টি হাতকে সম্বল করে জীবন সংগ্রামে নেমে পড়েন। যতদিন শরীরে জোর ছিল পেছনে ফিরে তাকাননি। কিন্তু এখন শেষ প্রান্তে এসে জীবনের হিসাব আর মেলে না।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনু ব্যাপারীর আকুতি, না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী অনেক দিয়েছেন। এখন একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চান তিনি।
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে যশোর উপশহরের ২নং সেক্টরের মনিরুল শেখের বাড়িতে ভাড়া থাকেন আনু ব্যাপারী। তার জন্মস্থান মাদারীপুরের শিবপুর উপজেলার শিরুয়াইল গ্রামে। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং- ০১১০০৩০৩৪৬।
আনু ব্যাপারী যুদ্ধদিনের স্মৃতিচারণ করে জানান, একাত্তরে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ভারতে চলে যান। বিহারে একমাস ট্রেনিং নিয়ে শিবচরে ফিরে আসেন। থানা কমান্ডার লতিফের নেতৃত্বে তিনিসহ সালাম, কালাম, মতি, সুনীল পালসহ আরও অনেকে যুদ্ধ করেছেন। নিজ এলাকাকে শত্রুমুক্ত করেছেন। আনু ব্যাপারী বলেন, দেশ স্বাধীন হলে আবার ফিরে গেছেন চাষবাসের জীবনে। ছোট্ট একটু ভিটেবাড়িতে থেকে পরের জমি চাষাবাদ করে জীবন কেটে যাচ্ছিল আনু ব্যাপারীর। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হলেও নদী ভাঙনের কাছে হার মানেন তিনি।
Advertisement
প্রায় ৩০ বছর আগে আড়িয়াল খাঁ’র ভাঙনে চার কাঠার ভিটে বাড়ি নদীর পেটে চলে যায়। এরপর শুরু হয় উদ্বাস্তু জীবন। চলে আসেন যশোরে। ঠাঁই নেন উপশহরে। এই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থেকে ভাঙড়ি কুড়িয়ে জীবন যাপন শুরু করেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আর কাজ করতে পারেন না তিনি। আনু ব্যাপারী আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে কোনোভাবে জীবন চলে তাদের। তিন মেয়ে লেখাপড়া করে। আরেক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এক ছেলে দোকানের কর্মচারী। ছয়জনের সংসার কোনোভাবে চলে যাচ্ছে।
আনু ব্যাপারীর আকুতি, প্রধানমন্ত্রী অনেক দিয়েছেন। তার কাছে আর চাওয়ার কিছু নেই। তবে শেষ বয়সে এসে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই দরকার।
মিলন রহমান/এফএ/এমএস
Advertisement