যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ হয়ে ওঠা ইয়েমেনের শিশু আমাল হুসেন শেষ পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে কাছে হেরে গেছে। শহরে এক শরণার্থী শিবিরে মারা গেছে আমাল।
Advertisement
মার্কিন এক দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় শিশু আমাল হুসেনের ছবি। না খেতে পাওয়া কঙ্কালসার চেহারার সাত বছরের আমাল কয়েক দিনেই যুদ্ধদীর্ণ ইয়েমেনের মুখ হয়ে উঠেছিল।
গত বৃহস্পতিবার তার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, আসলাম শহরে এক শরণার্থী শিবিরে মারা গেছে আমাল। আমালের মা মরিয়ম আলি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার মন ভেঙে গেছে। আমাল খুব হাসিখুশি ছিল। আমার অন্য বাচ্চাদের নিয়েও খুব চিন্তা হচ্ছে।’
দু’চোখে শূন্যতা, পাঁজরের হাড় বের হওয়া আমালের ছবি ফেসবুকে অন্তত ৪৩ হাজার শেয়ার হয়। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ছবিটিকে ‘উলঙ্গ, তাই যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন’ তকমা দিয়ে ব্লক করতে শুরু করে। আর তাতেই প্রতিবাদের ঝড় তোলেন নেটিজেনরা। মর্মান্তিক একটি ছবিকে এভাবে ব্লক করে দিয়ে ইয়েমেনের বাস্তবকেই অস্বীকার করা হচ্ছে বলে সরব হন তারা। পরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফেসবুক।
Advertisement
ইয়েমেনে অন্তত ১৮ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে
অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা আমালকে সম্প্রতি ইয়েমেনে সরকারি একটি স্বাস্থ্য শিবিরে নেয়া হয়েছিল। সেখানেই ওই ছবিটি তোলা হয়। আমালের চিকিৎসক জানান, ডায়েরিয়ায় ভুগছিল মেয়েটি। প্রতি দু’ঘণ্টায় দুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। কিন্তু এতটাই অসুস্থ ছিল যে প্রতি বারই তা বমি করে বের করে দিচ্ছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অর্থের অভাবে শরণার্থী শিবিরেই আমালকে ফিরিয়ে নেয় পরিবার। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আমালের মৃত্যুতে ইয়েমেনের যুদ্ধপরিস্থিতির জন্য সরাসরি আঙুল উঠছে সৌদি আরবের দিকে। কারণ ইয়েমেনের এই দুরবস্থা সৌদির সঙ্গে ইরানের ছায়াযুদ্ধ। ইরান সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের ইয়েমেন থেকে হটাতে ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে সৌদি। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও রয়েছে।
আকাশপথে সৌদির হামলা থেকে বাঁচতে তিন বছর আগে বাড়ি ছেড়েছিল আমালের পরিবার। সরকারি এক হিসেবে বলা হয়েছে, ইয়েমেন অন্তত ১৮ লাখ শিশু আমালের মতো অপুষ্টিতে ভুগছে। সূত্র : গ্লোবাল নিউজ
Advertisement
আরএস/এমএস