আন্তর্জাতিক

পাঁচ বাঙালি হত্যাকাণ্ডে উত্তাল আসাম

ভারতের আসাম রাজ্যে বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে সাত বাঙালিকে অপহরণ করে ব্রহ্মপুত্রের পারে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন পাঁচজন। এ হত্যা কাণ্ডের ঘটনায় আসামজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

Advertisement

আসামের বাংলাভাষী তিরিশটি সংগঠন এ হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা বনধ পালনের পর শনিবার পুনরায় বনধ্ ডেকেছে। সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক সুকুমার বিশ্বাস বলছেন, বাঙালিদের মনে আতঙ্ক ছড়াতেই এই হত্যাকাণ্ড।

পুলিশের সন্দেহ, আসামের জঙ্গি সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম (উলফা-স্বাধীন) এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে তারা হত্যার দায় অস্বীকার করেছে। ওই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া সহদেব নমঃশূদ্রেরও সন্দেহ, যারা হামলা চালিয়েছে তারা উলফা জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য।

নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘তিন দিন আগেই উলফার আলোচনাপন্থী নেতারা রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এনআরসি-র বিরুদ্ধে যে বাঙালিরা বাড়াবাড়ি করছে, তাদের ঘরে ঘরে ঢুকে মারা হবে।’’

Advertisement

উলফা (স্বাধীস) না-কি তাদের আলোচনাপন্থী অংশ, কারা ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মুখ খোলেননি অাসামের পুলিশ প্রধান কুলধর শইকিয়া। শুক্রবার সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু নির্দিষ্ট সূত্র পেয়েছি। খুব দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।’

শুক্রবার সকাল থেকে নিহত ওই পাঁচ ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বাংলাভাষী সংগঠনের সদস্যরা। জেলার বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। শুক্রবার সকালেই বাংলাভাষী মানুষের মনে ফিরে আসে নব্বইয়ের আতঙ্ক। এছাড়া কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির প্রধান অখিল গগৈ বলেন, ‘বিজেপি সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্যই এই ঘটনা।’ এদিকে এ ঘটনার জন্য বিজেপি সরকারের নীতিকেই দায়ী করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।

রাজ্যসভা নিহত পাঁচজনের পরিবারকে এককালীন ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি চাকরি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল বলেন, ‘যারা এই কাজ করেছে তারা কাপুরুষ। তাদের প্রত্যেককে আইনানুগ শাস্তি দেওয়া হবে।’

Advertisement

শনিবার অাসাম বনধে্র ডাক দিয়েছে সেখানকার বাংলাভাষী সংগঠনগুলি। গোটা অাসাম জুড়ে জাতি-ধর্ম ভিত্তিক একটা মেরুকরণের অশনি সঙ্কেত দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

সূত্র: আনন্দবাজার

এসএ/এমএস