অর্থনীতি

স্বাভাবিক চাকরির নিশ্চয়তা চান গ্রামীণফোন কর্মীরা

স্বাভাবিক চাকরির নিশ্চয়তাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের কর্মীরা। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোন এমপ্লায়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মাসুদ এসব দাবি জানান।

Advertisement

তিনি বলেন, ২০১২ সালে গ্রামীণফোনে স্থায়ী লোকবল ছিল ৫ হাজার। ছাঁটাইয়ের কারণে এখন তা কমে প্রায় ২ হাজার ৩০০ জন হয়েছে। স্থায়ী কর্মী ছাঁটাই করে ভাড়া করা (আউটসোর্স) লোক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এতে দিন দিন গ্রামীণফোনের সেবার মান কমে যাচ্ছে। একজন স্থায়ী কর্মী যে রকম কাজ করেন, ভাড়া করা কর্মী দিয়ে তা সম্ভব নয়।

২০০৭ সাল থেকেই গ্রামীণফোনে কর্মী ছাঁটাই চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা স্বাভাবিক চাকরির নিশ্চয়তা চাই। শিগগিরই কর্মী ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কোনো ধরনের স্থায়ী কাজ আউটসোর্স দিয়ে করানো যাবে না।

মিয়া মাসুদ বলেন, ‘২০১৭ সালে গ্রামীণফোনের নেট মুনাফা ছিল ২ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। আর চলতি বছর প্রথম ৯ মাসেই নেট মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। আমাদের কর্মীরা এতো মুনাফা এনে দিচ্ছেন, বিনিময়ে তারা শুধুমাত্র চাকরির নিশ্চয়তা এবং ন্যায়সঙ্গত সুযোগ চান। যা গ্রামীণফোনের আয়ের তুলনায় খুবই নগণ্য।’

Advertisement

এ সময় গ্রামীণফোন কর্মীদের পক্ষ থেকে তিনি ১২ দফা দাবি তুলে ধরেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দাবির বিষয়ে সরকার ও গ্রামীণফোনের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ কী ধরণের পদক্ষেপ নেন তার উপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো। তবে দাবি আদায়ে আমরা কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দিচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোন সিবিএ সভাপতি ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক রফিকুল কবির সৈকতসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রামীণফোন কর্মীদের ১২ দফার মধ্যে রয়েছে-

১). গ্রামীণফোনের সিডিসি এবং প্রজেক্ট ব্রিজসহ চাকরি হারানোর আশঙ্কা আছে এমন সব প্রজেক্ট শিগগিরই বন্ধের ঘোষণা দিতে হবে।

Advertisement

২). সব কর্মীর ন্যূনতম বেতন হবে শ্রম বাজারের গড় বেতনের সমান, অর্থাৎ কম্পারেশিও হবে ন্যূনতম ১০০ শতাংশ।

৩). পজিটিভ আউটলেয়ার প্রথা তুলে দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে পদোন্নতি দিতে হবে। গত ৪ বছরে যারা পদোন্নতি পাননি তাদের দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে।

৪). ওভারটাইম অ্যালাউন্স না দিয়ে পদ মর্যাদা নির্বিশেষে কাউকেই ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না।

৫). কাজের টার্গেট এমনভাবে সেট করতে হবে যাতে ৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়।

৬). কর্মীদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭). ট্রেড ইউনিয়ন সদস্যদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে।

৮). ট্রেড ইউনিয়ন সদস্যদের মামলার কার্যক্রমের উপর চলমান স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের ন্যায় বিচারের পথ সুগম করতে হবে।

৯). স্থায়ী কাজে সব ধরনের অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং বর্তমানে কর্মরত সব অস্থায়ী কর্মীর চাকরি স্থায়ী করতে হবে।

১০). সংবিধান মোতাবেক মৌলিক অধিকার তথা বাক স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

১১). বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারকে এদেশের সরাসরি ও স্থায়ী কর্মসংস্থানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

১২). টেলিকম খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজস্ব আয়ের ২০ শতাংশ কর্মীদের বেতন ও কল্যাণের জন্য ব্যয় করতে বাধ্য করার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে টেলকম খাতে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এমএএস/আরএম/এমএমজেড/পিআর