জাতীয়

রিকশাচালকদের পোয়াবারো

‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। চলছে না যানবাহন। ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে রিকশা। এতেই কপাল খুলেছে চালকদের। নির্দিষ্ট স্থানে যাত্রী পৌঁছে দিতে চলছে নানা টালবাহানা। দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া হাঁকছেন তারা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

Advertisement

রোববার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। কর্মসূচির প্রথম দিন রাজধানীতে চলছে না গণপরিবহন। মাঝে মধ্যে বিআরটিসির দু-একটি বাস দেখা মিললেও তাতে ওঠা সম্ভব হচ্ছে। কারণ সব বাসই ভর্তি।

পরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর সাধারণ মানুষ। যার সুযোগ নিয়েছেন রিকশাচালকরা। আগে যেসব সড়কে রিকশা যেতে পারত না এখন সব জায়গায়ই রিকশার দাপট। তবে সমস্যা একটাই স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ ভাড়া চাচ্ছেন রিকশাচালকরা। যারা দরকষাকষি করছে তাদের একটাই উত্তর যাবো না।

Advertisement

রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে দাঁড়িয়ে আছেন সাইদ খান। যাবেন শাহবাগ। গাড়ি পাচ্ছেন না। তবে সব মোড়েই রয়েছে অসংখ্য রিকশা। এক রিকশাচালককে শাহবাগ যাবেন বলতেই উত্তর দিলেন ১০০ টাকা। কমে যাবেন কি না জানতে চাইলে সাফ 'না' বলে দিলেন। স্বাভাবিক সময়ে মতিঝিল থেকে শাহবাগের ভাড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আজ চাচ্ছে দ্বিগুণ। কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়ায় গেলেন সাইদ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সাইদ খান বললেন, সবাই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। শুধু ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে। এভাবেই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করছে তারা।

পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অফিসে যাওয়ার চরম ভোগান্তির কথা জানালেন ব্যাংকার আসিফ আহমেদ। তিনি বলেন, কোনাপাড়া থেকে মতিঝিল অফিসে আসবো। সকালে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম কোনো গণপরিবহন পাইনি। একটি বাস আসলো কিন্তু যাত্রী ভর্তি ওঠার মতো পরিস্থিতি নেই। রিকশা ভাড়ার দরদাম করতে করতে ক্লান্ত।

আসিফ আহমেদ বলেন, কোনো রিকশাই দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি ভাড়া ছাড়া আসবে না। হেঁটে ও অটোরিকশা দিয়ে যাত্রাবাড়ী আসলাম। এরপর যাত্রাবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দুইজন শেয়ার করে রিকশায় আসলাম। ৬০ টাকা করে ভাড়া দিলাম ১২০ টাকা। কমপক্ষে ২০টা রিকশাচালককে বলেছি। এর নিচে আসবে না। অন্য সময় যার ভাড়া সর্বোচ্চ ৬০ টাকা ছিল।

Advertisement

এদিকে রাজধানীর পল্টন এলাকা কবির আহমেদ নামের এক যাত্রী বলেন, রামপুরা যাবো বাস পাচ্ছি না। রিকশাচালককে ভাড়া জিজ্ঞাসা করলাম, ১৫০ টাকা চাইলো। কীভাবে যাবো বলেন।

ভাড়া কেন বেশি চাচ্ছেন? জানতে চাইলে রিকশাচালক কাইয়ুম বলেন, বেশি ভাড়া চাই নাই। এর নিচে যাওয়া সম্ভব না। যাইলে যাবে না যাইলে যাবেন না। আমিতো জোড় করে নিচ্ছি না।

এসআই/বিএ/আরআইপি