আন্তর্জাতিক

ম্যাগনাকার্টা চুরির চেষ্টা!

আবার আলোচনায় আসল ব্রিটেনের নিরিবিলি শহর স্যালিসবারি। এর আগে রুশ গুপ্তচর স্ক্রিপাল ও তার মেয়ের ওপর নার্ভ গ্যাস হামলার জের ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এই শহরটি। এবার এই শহর থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। অভিযোগ, শহরটির স্বনামধন্য এক গির্জা থেকে ম্যাগনাকার্টা দলিলের একটি কপি চুরির চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খবর সিএনএন

Advertisement

উইলশায়ার পুলিশের বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাগনাকার্টা দলিলের একটি কপি চুরির চেষ্টাকালে বৃহস্পতিবার ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার দিকে গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি চুরির উদ্দেশ্যে দলিল রাখার পাত্রটির গ্লাস ভেঙে ফেলেন। তবে দলিলটি হাতে আসার আগেই তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

তবে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ওই দলিলটিও অক্ষত রয়েছে।

ইংল্যান্ডের অ-জনপ্রিয় রাজা জন ও বিদ্রোহী ব্যারনদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য যে চুক্তি করা হয়, সেটিই ম্যাগনাকার্টা বা গ্রেট চার্টার নামে পরিচিত। রাজা জনের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বেশ কিছু জমি ছিল ফ্রান্সে। ১২০৪ সালে ওই সম্পত্তির অধিকাংশই হাতছাড়া হয়। সম্পত্তি ফিরে পেতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন জন। অর্থ জোগান দিতে রাজ্যে কর বাড়িয়ে দেয়া হয়। ব্যয়ভার বহন করতে হয় ব্যারনদের। যুদ্ধ ঠিকই হয়; কিন্তু জিততে পারেনি জন। ফলে রাজা ও ব্যারনদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। রাজা অন্যায়ভাবে জবরদখল শুরু করে। কদিন পর পরই চালু করে নতুন কর।

Advertisement

একপর্যায় ব্যারনরা রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে ও শান্তিচুক্তির প্রস্তাব দেয়। ব্যারনদের বিদ্রোহের মুখে জন শান্তিপ্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হয়। ১২১৫ সালের ১৫ জুন রানিমেইড নামক স্থানে বসে কিং জন চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করে।

এই চুক্তি মানবাধিকারের মহাসনদ নামেও পরিচিত। এই চুক্তির ধারাগুলো্র উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এবং আইনের শাসনের ভিত্তি রচিত হয়। ম্যাগনাকার্টাকে ব্রিটিশ শাসনতন্ত্রের বাইবেল এবং ইংল্যান্ডের প্রথম শাসনতন্ত্র বলা হয়ে থাকে।

এই দলিলের চার কপির একটি স্যালিসবারির গির্জায় সংরক্ষিত আছে। এটি হাতে লেখা এবং ল্যাটিন ভাষায় লিখিত। অন্য তিনটি কপি ব্রিটিশ লাইব্রেরি ও লিংকন গির্জায় সংরক্ষিত রয়েছে।

এদিকে ঐতিহাসিক এ দলিলটি চুরি হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছে স্যালিসবারি গির্জা। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, পরিস্থিতি খুব দ্রুত এবং কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ।

Advertisement

এতে এ ঘটনার পর সাময়িক সময়ের জন্য দর্শানার্থীদের জন্য আর উন্মুক্ত থাকছে না মানবাধিকারের এই মহাসনদ। তবে খুব শিগগিরই এটি দর্শনার্থীদের জন্য আবার উন্মুক্ত করে দেয়া বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

এসআর/পিআর