জাতীয়

‘ফানুসের আলোয় শান্তির বারতা’

প্রবারণা শব্দের অর্থ আত্মনিবেদন। ফানুসকে বৌদ্ধধর্মের ভাষায় বলা হয় `আকাশ বাতি'। মূলত প্রবারণা পূর্ণিমায় আকাশে বাতি বা ফানুস ওড়ানোর মধ্যদিয়ে বুদ্ধের অহিংসার বাণী ছড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুখশান্তি আর কল্যাণ কামনা করেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ। শান্তির সেই বারতা বিশ্বের সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয়ে বুধবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননের বৌদ্ধমন্দির থেকে ওড়ানো হয় শতাধিক ফানুস।

Advertisement

এর আগে সকাল থেকে দিনভর বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল, অষ্টশীল, ভিক্ষুসংঘের পিণ্ডদানসহ নানাধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুখর ছিল চট্টগ্রামের বৌদ্ধমন্দিরগুলো। পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আহার-বিনোদনের মধ্যদিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমার দিন পার করছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রবারণা পূর্ণিমা ঘিরে বৌদ্ধমন্দিরের চারপাশে বসে বিভিন্ন সামগ্রীর মেলা।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকেই লোকজনের আগমনে মুখর হয়ে ওঠে নগরীর বৌদ্ধমন্দিরগুলো। ধনী-গরিব, তরুণ-বৃদ্ধ সব শ্রেণি-পেশার, সববয়সী মানুষ সকাল থেকেই নানা উৎসবে মেতে ওঠে। কৃপালাভের আশায় ভক্তিভরে গৌতম বুদ্ধের চরণে মঙ্গলপ্রদীপও প্রজ্বলন করেন হাজারও নারী-পুরুষ।

সকাল থেকে নগরীর কাতালগঞ্জের নবপণ্ডিত বিহার, পাথরঘাটা জেতবন শান্তিকুঞ্জ বিহার, ইপিজেড সর্বজনীন বৌদ্ধবিহার ও মৈত্রী বনবিহার, চান্দগাঁও সর্বজনীন বৌদ্ধবিহার, মোগলটুলী শাক্যমুণি বৌদ্ধবিহার, বন্দর বৌদ্ধবিহারসহ প্রায় প্রতিটি বৌদ্ধবিহার ও মন্দিরে মানুষের ঢল নামে। সন্ধ্যার পরপর প্রতিটি বৌদ্ধবিহার ভক্তদের পদচারণায় পূর্ণ হয়ে যায়। বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনাও হয়েছে বিভিন্ন মন্দিরে।

Advertisement

রুদুরা বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবু মুকুল কান্তি বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে প্রবারণা পূর্ণিমা পর্যন্ত সময়ে গৌতম বুদ্ধ প্রাণীকূলের মঙ্গলার্থে বিহারে অবস্থান করে তার উপাসক-উপাসিকাদের শান্তি আর ধর্মের মঙ্গলের জন্য ধর্ম নিদেশনা দেন। গৌতম বুদ্ধের যে চিরকল্যাণকর অহিংস বাণী তা সমুন্নত রেখে প্রবারণা পূর্ণিমা সকলের জীবনে শান্তি ও উন্নতি বয়ে আনুক এই কামনা করছি।’

এদিকে সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন মন্দিরে আসা লোকজনের মাঝে আনন্দের কমতি ছিল না। পরিবারের সবাইকে নিয়ে উৎসবে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন বয়সের লোক। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন ও সমিতি আয়োজন করে ফানুস ওড়ানোর উৎসব।

প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে নগরীর নন্দনকাননের বৌদ্ধবিহারের সামনের চৌমুহনীতে আল্পনা এঁকেছেন বৌদ্ধধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা। বর্ণিল এ কর্মযজ্ঞে অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও।

আবু আজাদ/বিএ

Advertisement