টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মহড়া দিচ্ছে কুকুরের দল। স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, শিশু ও পথচারীসহ সাধারণ মানুষকে কামড়ানোর চেষ্টা করছে দলবদ্ধ ওই কুকুরগুলো। কুকুরের কারণে পথচলা মুশকিল হয়ে পড়েছে পৌরবাসীর। এতে কোমলমতি শিশুরা যেমন ভয় পাচ্ছে স্কুলে যেতে তেমনি অভিভাবকরাও ভয় পাচ্ছেন সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে।
Advertisement
কুকুরের প্রজননের সময় ঘনিয়ে আসায় সখীপুর পৌর শহরসহ উপজেলাব্যাপী কুকুরের আনাগোনা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। কুকুর নিধনে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ব্যাপারে সখীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
সরেজমিনে জানা যায়, সখীপুর পৌরশহর ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি গ্রামে অসংখ্য কুকুর রয়েছে। পৌর শহরে প্রধান প্রধান সড়ক, চৌরাস্তা, মোড় এবং ছোট-বড় বাজারে দিনে-রাতে ২০-৩০টি কুকুর এক সঙ্গে দল বেঁধে চলে। কুকুরের দল প্রধান আস্তানা করেছে উত্তরামোড়, জেলখানা মোড়, উপজেলা রোড, মন্দির পাড়া, ঢাকা রোড, গার্লস স্কুল রোড, মহিলা কলেজ রোডসহ উপজেলার কচুয়া বাজার, কালিয়া বাজার, শোলাপ্রতিমা বাজার, দেওদিঘী বাজারে। এ কারণে বাজারের ক্রেতাদের ক্রয়কৃত খাদ্য সামগ্রী কেড়ে নিতে কুকুরের হামলায় অনেক পথচারী আহত হয়েছেন বলেও জানা যায়। এমনকি ছাত্র-ছাত্রী, একাকি কোন পথচারী কিংবা অটোভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীকে ওই কুকুররা তাড়া করে কামড়ানোর চেষ্টাও করছে।
কিছুদিন আগে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহায়তায় সখীপুর পৌরসভা কুকুরের জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশন দেয়। পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আসলে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাছাড়া কোনো কুকুরকে দেয়া হয়েছে আর কোনো কুকুরকে দেয়া হয়নি তা সনাক্ত করা মুশকিল।
Advertisement
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, কুকুরের কামড়ে মানুষ অহরহ আহত হচ্ছে। বিগত এক দেড় মাসে প্রায় শতাধিক কুকুরে কামড়ানো রোগী এসেছেন এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর কোনো চিকিৎসা না পেয়ে রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে স্বজনদের। প্রতিদিন এভাবে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছুই করার নেই।
সখীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর মো. জাহিদ হোসেন বলেন, পৌর এলাকায় যে হারে কুকুরের উপদ্রপ বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মানুষ প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। কিছুদিন আগে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহায়তায় প্রায় দুই-আড়াই হাজার কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে পৌরশহরের সকল কুকুরকে এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহীনুর আলম জানান, কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন, কুকুর বন্ধ্যাত্বকরণ পদ্ধতি বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশনের বরাদ্দ নাই। হয়তো কিছুদিন পরেই এর বরাদ্দ আসতে পারে। এ কারণে কুকুরে কামড়ানো রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/আরআইপি
Advertisement