এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটন কুমার দাসের আউট নিয়ে এখনও চলছে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই অভিযোগটা সমর্থকদের পর্যায় থেকেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা বলছেন, লিটন দাসের ওটা আউটই ছিল না। ভারতীয় সমর্থকরা বলছেন, আউট ছিল। এমনকি ভারতীয় সমর্থকরা বাংলাদেশের সমর্থকদের ‘আর কান্না না করার’ জন্যও পরামর্শ দিচ্ছে। জবাবে ভারতের সমর্থকদেরকে বলা হচ্ছে ‘চোর। আইসিসির সহযোগিতা নিয়ে চুরি করে ট্রফি জিতেছে।’
Advertisement
এ তো গেল সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এবার একদল অতি উৎসাহী সমর্থক ভারতীয় ক্রিকেট দলের নিয়মিত অধিনায়ক, যিনি কি না এশিয়া কাপই খেলেননি, সেই বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করছে, এই ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বাংলাদেশের হ্যাকাররাই। সাইবার সিকিউরিটি ইন্টিলিজেন্স (সিএসআই) নামক একটি গ্রুপ এই কাজ করেছে।
লিটন কুমার দাসের ওয়েব সাইটে গ্রুপটি এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটন দাসের আউটের ছবি ঝুলিয়ে দিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতের দুবাইতে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে এশিয়া কাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। ওই ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন লিটন কুমার দাস। তিনি যখন ১২১ রানে ব্যাট করছিলেন তখন স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন।
ফিল্ড আম্পায়ার বিষয়টা টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠালে বেশ কয়েক অ্যাঙ্গেল থেকে আউট হয়েছে কি না দেখা হয়। এমনকি ফোর এক্স জুম ক্যামেরা দিয়েও দেখা হয় আউট হয়েছে কি না। জুম ক্যামেরা যখন ব্যবহার করা হয় তখন সেটা একবার ব্যবহারেই নিশ্চিত হওয়া যায় আউট কি না। কিন্তু দেখা হয়েছে তিনবার। সন্দেহ যখন ছিলই সেটা ক্রিকেটের বেনিফিট অব ডাউট নিয়মে সিদ্ধান্তটা ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যাওয়ার কথা। কিন্তু বেনিফিট অব ডাউট গেলো বোলারের পক্ষে।
Advertisement
এ ঘটনার পরই বিতর্ক দানা বেধে ওঠে। যার জের ধরে হ্যাক করা হলো বিরাট কোহলির ওয়েব সাইট। ২৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে www.viratkohli.club/gallery ওয়েবসাইটটি এখন পর্যন্ত হ্যাকারদের দখলে। এতে আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতি বার্তা দিয়েছে হ্যাকাররা। যেখানে সিএসআই যে এ কাজ করেছে তারও স্বীকৃতি রয়েছে। এমনকি তারা এ নিয়ে ফেসবুকেও পোস্ট দিয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে সিএসআই লিখেছে, ‘আমরা সবাই জানি, ক্রিকেট হলো জেন্টেলম্যানদের খেলা! কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিবার এমনভাবে পক্ষপাতিত্ব করার জন্য ব্যর্থ হয়! যার প্রতিবাদ হিসেবে বিরাট কোহলির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করা হলো এবং সামনে আরও অনেক কিছু হবে!’
ওয়েসবাইটে হ্যাক করে সেখানে হ্যাকাররা আইসিসির প্রতি এক বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘প্রিয় আইসিসি, ক্রিকেট কি ভদ্রলোকের খেলা নয়? প্রত্যেক দলের কি ফেয়ার প্লের সুযোগ পাওয়ার অধিকার নেই? দয়া করে ব্যাখ্যা করুন তো, এটা কীভাবে আউট হয়? আপনারা যদি এজন্য অফিসিয়ালি ক্ষমা না চান এবং আম্পায়ারদের শাস্তি না দেন, তাহলে প্রতি মুহূর্তে আপনাদের ওয়েবসাইট হ্যাকড হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন!’
সিএসআই সেখানে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতি বার্তা দিয়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘ভারতীয় ভাই এবং বোনেরা, আমরা আপনাদের অসম্মান করছি না। দয়া করে ভাবুন তো, এমন ঘটনা যদি আপনাদের দলের সঙ্গে হতো তাহলে কেমন লাগত আপনাদের? প্রতিটি জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সমাধিকার পাওয়ার অধিকার রাখে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
Advertisement
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেও দুটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গিয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের সম্পর্ক রূপ নিয়েছিল আদায়-কাঁচকলায়। যে কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছিল, বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদের হাতে ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির কাটা মুন্ডু। এবার লিটন দাসের এই ঘটনার পর আবারও যেন ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জেগে উঠেছে।
আইএইচএস/এমএস