সৃষ্টি যার প্রশংসা তার। সৃষ্টির প্রতি দয়া করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য জরুরি। সৃষ্টির প্রতি দয়া করা মহান আল্লাহ তাআলার এক রহমতের এক অপূর্ব নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকে ভালবাসেন। তাই সৃষ্টি প্রতি দয়াকারীকে আল্লাহ তাআলা ভালবাসেন। আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। বাংলাদেশসহ পৃথিবী জুড়ে সৃষ্টির প্রতি চলছে জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন। অথচ আল্লাহ তালা সৃষ্টির দয়ার কথা বলেছেন। জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য সৃষ্টির প্রতি দয়ার গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরা হলো-এ বিষয়ে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে->> হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ সে ব্যক্তির ওপর দয়া করেন না, যে ব্যক্তি মানুষের ওপর দয়া করে না। (বুখারি ও মুসলিম)>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একবার এক বেদুঈন (গ্রাম্য লোক) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামের কাছে এসে দেখল যে, সাহাবায়ে কেরাম তাদের শিশু সন্তানদের চুমু খেয়ে আদর করছেন। তা দেখে সে বলল, তোমরা কি তোমাদের শিশু সন্তানদের চুম্বন কর, আমরা তো তা করি না। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ তোমাদের অন্তর হতে স্নেহ ও মমতা উঠিয়ে নিলে আমি কি তাতে বাধা দিতে পারি (বুখারি ও মুসলিম) অন্যান্য সৃষ্টিজীবের প্রতি দয়া করার পাশাপাশি নিজের কন্যাসন্তান থাকলে তাদের প্রতিও দয়া করতে হবে।>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একদিন এক স্ত্রীলোক আমার কাছে আগমন করল। তার সঙ্গে তার দুটি কন্যাও ছিল। স্ত্রীলোকটি আমার কাছে কিছু খবার ভিক্ষা চাইল; আমি তাকে কিছু দিলাম। কিন্তু তখন সে নিজে না খেয়ে কন্যা দুটিকে দিল। নিজে কিছুই রাখল না। তারপর সে উঠে চলে গেল। এমন সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম তাশরিফ আনলে আমি এ ঘটনাটি তাঁর কাছে বললাম। তিনি বললেন, যেসব ব্যক্তি কন্যা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে এবং তদবস্থায় তাদের সঙ্গে এরূপ সদাচরণ করেছে, এ কন্যারা তার জন্য দোজখের আগুন হতে প্রতিরোধকারী হবে (বুখারি ও মুসলিম)>> হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুটি কন্যার প্রাপ্তবয়স্কা হওয়া পর্যন্ত তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব বহন করবে, আমি এবং সে ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে এভাবে একসঙ্গে থাকব। এ কথা বলে তিনি হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন (মুসলিম)। এতিম-বিধবা ও অসহায়দের দয়া করার প্রতি গুরুত্ব দিতেও ভুলেনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি ইরশাদ করেন->> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বিধবা এবং মিসকিনদের তত্ত্বাবধান করে, সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী তুল্য। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাও বলেছেন যে, সে (বিধবা এবং মিসকিনদের তত্ত্বাবধানকারী ব্যক্তি) এমন রাত জাগরণকারী, যে আলস্য করে না এবং ওই রোজাদারের মতো, যে কখনো রোজা ভঙ্গ করে না (বুখারি ও মুসলিম) অর্থাৎ এই পরিমাণ সওয়াব সে পাবে।মানুষ আজ সমাজের হেন অপরাধ নেই যা করে না। পাশাপাশি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের প্রতিও করে অবিচার। হে আল্লাহর বান্দা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের শিক্ষা বাস্তবজীবনে বাস্তবায়ন করে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।এমএমএস/এমআরআই
Advertisement