বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেছেন, বিএসএমএমইউ কোনো শপিং মল বা স্টেডিয়াম নয়। এটি একটি হাসপাতাল। শপিং মল বা স্টেডিয়াম চত্বরে মানুষ যেমন যখন তখন গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে, ইচ্ছেমতো গাড়ি পার্কিং করে শপিং বা খেলা দেখতে চলে যায় ঠিক তেমনি বিএসএমএমইউতে নানান পরিচয়ে মানুষ গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে। বিশ্বের কোনো দেশে এ ধরনের নজির নেই।সোমবার জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ডা. কামরুল বলেন, হাসপাতাল ক্যাম্পাসের পরিবেশ হতে হবে স্নিগ্ধ, মনোরম ও কোলাহল মুক্ত। রোগী ও চিকিৎসকদের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু দুভার্গ্যবশত বিএসএমএমইউ হাসপাতালে এমন পরিবেশ নেই। হাসপাতালের ভিতরে অপ্রয়োজনে দর্শণার্থীরা ভিড় করছে।তবে ক্যাম্পাসে গাড়ির ভিড় ও অপ্রয়োজনীয় দর্শণার্থীর সংখ্যা কমিয়ে উন্নত বিশ্বের মতো বিএসএমএমইউ’র ক্যাম্পাস স্নিগ্ধ, মনোরম ও কোলাহল মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান জানান, হাসপাতাল ক্যাম্পাসে মাত্র ৮০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বিএসএমএমইউ’র সিনিয়র চিকিৎসক শিক্ষক, শিক্ষা ও গবেষণা কাজে যারা জড়িত আছেন তাদের গাড়ি রাখার জন্যই এ ক্যাম্পাসের জায়গা পর্যাপ্ত নয়। এ কারণে তারা বিএসএমএমইউ কেবিন ব্লকের পাশে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসা বিঘ্নের বিষয়টি অনেকে মানতে চান না। জোরপূর্বক গাড়ি ভিতরে প্রবেশ করিয়ে রেখে চলে যান।তিনি আরো জানান, বিএসএমএমইউতে বর্তমানে ১৫শ’ শয্যার হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে। আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার লোক চিকিৎসা নিতে আসছে। এত লোক ক্যাম্পাসে এলেও যেখানে হাঁটাই মুশকিল সেখানে গাড়ি নিয়ে ঢুকলে কী অবস্থা হয় তা সহজেই অনুমেয়।গত ২৩ মার্চ অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান ভিসি হিসেবে বিএসএমএমইউতে নিয়োগ পান। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারের আমলে তিনি রাজপথে নাগরিক সমাজের নেতা ‘কামরুল ভাই’ হিসেবে অধিক পরিচিত। ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও গবেষণার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছেন।জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক সোমবার গত কয়েকমাস ভিসি হিসেবে তার পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন হয়েছে কি-না জানতে চাইলে জানান, প্রতিদিনই তিনি কিছু কিছু পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন।তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে তিনি পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সম্পর্কে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগীয় শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিগত কয়েক মাসে তিনি পরিকল্পনা অনুযায়ী সবার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যা সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন।তিনি আরো বলেন, সমস্যা চিহ্নিত হয়ে গেছে। এবার পর্যায়ক্রমে সমস্যা নিরসনে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। হাসপাতালে দর্শণার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমেছে। প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে একজন দর্শণার্থীর জন্য পাস দেয়া হচ্ছে। নগদ ২শ’ টাকা জমা রেখে এ পাস দেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল ত্যাগের সময় পাস ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছে।এ সময় আগামী তিন মাসের মধ্যে জেনারেল ইমার্জেন্সি চালু হবে বলে এ প্রতিবেদকের কাছে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এমইউ/আরএস/বিএ
Advertisement