আইন ও বিচার বিভাগের উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
Advertisement
শনিবার দুপুরে রাজধানীর আহাছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। খানবাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক ২০১৭ প্রদান উপলক্ষে ঢাকা আহছানিয়া মিশন কর্তৃক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি, আইন ও বিচার বিভাগের উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকসহ এদেশের জ্ঞানতাপস ও ধনাঢ্য আইনজ্ঞদের কাছে নিবেদন করব- তারা যেন আমাদের প্রতিবেশী দেশের আদলে অন্তত একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে, যা আইন শিক্ষার গুণগত মান ও গবেষণার বিস্তৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে। তাদের এ কর্মের জন্য ভবিষ্যত প্রজন্ম যারা আইনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করবে তাদের কাছে তারা প্রাতঃস্বরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।’
অনুষ্ঠানে খানবাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক ২০১৭ গ্রহণ করা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, দ্বিধাহীনভাবে বলতে পারি, যে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান এবং তিনি তার নিজের দ্বারাই একটি বৈশিষ্ট্য। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষা, বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা অপরিসীম। তিনি বিভ্নি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে আদালতে মূল্যবান মতামত দিয়ছেন। তার প্রদত্ত মতামত বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নেও তিনি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছেন। আইনজীবী হিসেবে সততা, নিষ্টা ও সমতার পরিচয় দিয়েছেন। আইন বিষয়ে তিনি গভীর পান্ডিত্বের অধিকারী। তিনি কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পাননি। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে তিনি সবসময় অবিচল থেকেছেন।
Advertisement
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তিনি নিজের উপার্জিত অর্থের অধিকাংশ বয় করেছেন সমাজ সেবায় এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, এতিমখানা ও মসজিদ। বারডেম হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, নূরজাহান ওয়ার্ড, আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল এবং আদ দ্বীন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার অনন্য ভূমিকা রয়েছে। এ বয়সেও তিনি আইন পেশার পাশাপাশি আদ দ্বীন মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান হিসেবে তার দায়িত্ব অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছেন।
স্বর্ণপদক প্রাপ্তিতে ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের দেশে ব্যক্তির জীবদ্দশায় সম্মানিত করার দৃষ্টান্ত খুব বেশি চোখে পড়ে না। ঢাকা আহছানিয়া মিশন সে ক্ষেত্রে প্রশংসার দাবিদার। এ বছর খানবাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক ২০১৭ পদকে ভূষিত করা হয়েছে বিশিষ্ট সমাজসেবী ও স্বনামধন্য প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে। এ জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক শুধু একজন আইনজীবীই নন, তিনি একজন সামজ সেবক ও সংস্কারক। তার কর্মদক্ষতা সর্বজনবিদিত, তার পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা সর্বমহলে সমাদৃত। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ড. এস এম খলিলুর রহমান, খানবাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক প্রাপ্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কাজী শরিফল আলম, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ প্রমুখ।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম
Advertisement