অঞ্জলি জৈন (২৩) নামে এক হিন্দু তরুণীর সঙ্গে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক মুহম্মদ ইব্রাহিম সিদ্দিকির (৩০)। সেই প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। নিজের নাম রেখেছেন আরয়ান আর্য। হিন্দু রীতিনীতি মেনে সেই প্রেমিকাকে বিয়েও করেছেন। কিন্তু সেই স্ত্রীই এখন আর স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে চাইছে না ইব্রাহিমকে।
Advertisement
চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন ভারতের ছত্তিসগড় রাজ্যের বাসিন্দা ইব্রাহিম। তার ঠিক দুদিন পর হিন্দু রীতিনীতি মেনে রায়পুরের (ছত্তিসগড়ের রাজধানী) আর্য সমাজ মন্দিরে প্রেমিকাকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর অঞ্জলি বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু পরিবারের কাছে বিয়ের বিষয়টি চেপে যান তিনি। পরে বাড়ির লোকেরা বিয়ের কথা জানতে পেরে মেয়েকে স্বামীর কাছে যেতে বাধা দেয়। অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে।
স্ত্রীকে ফিরে পেতে ছত্তিশগড় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইব্রাহিম। বিচারপতির নির্দেশে গত ৩০ জুলাই আদালতে হাজির হন অঞ্জলি ও তার বাবা। আলাদাভাবে অঞ্জলির বক্তব্য শোনা হয়। আদালতকে তিনি জানান, ‘তার পরিবার এই সম্পর্কের বিরোধী ঠিকই। তবে জোর করে তাকে আটকে রাখার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এরপর আদালত অঞ্জলিকে কিছু সময় নিতে বলেন, যাতে তিনি নিজের ব্যাপারে নিজেই সিদ্ধান্তে আসতে পারেন। আদালত এই সময়ের মধ্যে অঞ্জলিকে বাড়ি অথবা হোস্টেলে থাকার নির্দেশ দেয়।
Advertisement
হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ইব্রাহিম এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এরপর ছত্তিসগড় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ ছত্তিশগড় রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। রাজ্য সরকারের কাউন্সিলের কাছে পিটিশনের কপি চেয়েও পাঠিয়েছে।
অঞ্জলি এবার সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চকে বলেছেন, ‘যদিও তিনি নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছিলেন, তবে প্রকৃতপক্ষে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করেন।’
সুপ্রিম কোর্ট তাকে বলেন, ‘আপনি প্রাপ্তবয়স্ক, আপনাকে স্বাধীন ইচ্ছার ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি স্বামীর সঙ্গে যেতে না চায় তবে এটি একটি বিয়ের মামলা হয়ে দাঁড়াবে।’
অঞ্জলির আইনজীবী বলেন, এটি একটি লজ্জাজনক বিয়ে। ওই ব্যক্তি আগেও দুইবার বিয়ে করেছেন এবং সেটা গোপন করেছেন।
Advertisement
এমবিআর/জেআইএম