মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে ট্রাভেল পারমিট ইস্যুতে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও থেমে নেই দালালরা। যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ট্রাভেল পারমিট (টিপি) করে দেয়ার নামে একাধিক দালালি অফিস। ওইসব অফিস ফেসবুক আইডি খুলে ওয়ালে ‘ট্রাভেল পারমিট’ করে দেয়ার নামে সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার রিঙ্গিত। এতে করে অবৈধ বাংলাদেশিরা ট্রাভেল পাস পেতে পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
Advertisement
বিশেষ করে এসব জালিয়াতি আর অপপ্রচারে পুড়ছে কক্সবাজারের বাসিন্দাদের কপাল! আর এ জালিয়াতির কারণে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে ট্রাভেল পাস ইস্যুতে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র যারা মালয়েশিয়া এবং কক্সবাজার এলাকায় এই সকল দুই নম্বরি কাজে সক্রিয়, তাদের কথার বাইরে গেলে হাইকমিশনের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা কারণে প্রতারনার শিকারে অবৈধ হয়ে পড়া শ্রমিকরা ট্রাভেল পাস নিতে ভোরবেলা থেকেই বাংলাদেশ হাইকমিশনে এসে ভিড় করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়ে বিকেলে আবার পুলিশি গ্রেফতার এড়িয়ে কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে অর্থ খরচ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি নির্ধারিত সেকশনে জমা দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেল্পলাইন ফর বাংলাদেশি, মালয়েশিয়ায় চাকরির খবর, জব্স ইন মালয়েশিয়া ফর ফরেনার, ফায়সাল মাহমুদ অপূর্ব ও মোহাম্মদ শরিফুল আলম নামের ফেসবুক আইডি ট্রাভেল পাস দেয়ার নামে বিভিন্ন প্যাকেজ চালু করেছে। এর মাধ্যমে ১৬০০-২৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (শ্রম) সায়েদুল ইসলাম মুকুল এ প্রতিবেদককে জানান, যাতে ইস্যুকৃত ট্রাভেল পাসের অপব্যবহার না করা হয়, সেজন্য যাচাই-বাছাই করে ট্রাভেল পাস দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা। অনেক সময় দেখা গেছে, টেকনাফের লোক সেজে ট্রাভেল পাস নিতে আসে। এজন্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভিসার কপি (যদি থাকে) জমা দিতে হবে। অন্যথায় টিপি দেয়া সম্ভব নয়।’
তবে ভুক্তভোগী প্রবাসী ও মালয়েশিয়া কমিউনিটি নেতারা বলছেন, বৈধ-অবৈধ সকল নাগরিকদের ট্রাভেল পাস পাওয়ার অধিকার আছে। প্রবাসে এসে যারা কঠোর পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন, তারাই বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন। তারপরও ভোটার আইডি, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সনদ এবং পাসপোর্টের কপি থাকলে প্রবাসীদের যেকোনো সময় ট্রাভেল পাস দিতে হাইকমিশন বাধ্য। কিন্তু দালালচক্রের অপতৎপরতা বেড়ে যাওয়া ও ট্রাভেল পাস ইস্যুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার কারণে অবৈধ শ্রমিকরা এখন দেশে ফেরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
Advertisement
এসআর/এএইচ/এমএস