খেলাধুলা

ওয়ানডে সিরিজ জিততে না পারার আক্ষেপ মিঠুনের

গত বছর মে মাসে আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি টুর্নামেন্টে জাতীয় দল দুই বারের মোকাবিলায় ১-০‘তে হারিয়েছে আইরিশ জাতীয় দলকে। আর একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে হয়েছে পরিত্যক্ত।

Advertisement

১৪ মাস পর এবার সেই আয়ারল্যান্ডে খেলতে গিয়ে আইরিশ ‘এ’ দলের সাথে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-২‘এ ড্র আর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে এসেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।

হার-জিতের ব্যবচ্ছেদে যেহেতু দুই ফরম্যাটে জয়ের পাল্লা ভারী, তাই ‘এ’ দলের আয়ারল্যান্ড সফরকে ব্যর্থ ভাবার ও বলার কোন কারণ নেই। কেউ তা বলছেনও না। বরং অনভ্যস্ত আইরিশ কন্ডিশনে বাংলাদেশের ছায়া দলের পারফরম্যান্সে তুষ্ট অনেকেই। 'এ' দলের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ মিঠুনও মনে করেন, আয়ারল্যান্ড সফর খারাপ হয়নি।

তবে মিঠুনের মতে টি টোয়েন্টির পাশাপাশি ওয়ানডে সিরিজও জেতা উচিৎ ছিল। আজ সকালে দেশে ফিরে মিঠুনের কণ্ঠে তাই এ সংলাপ, ‘সফর খুব খারাপ হয়নি। তবে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। আমাদের হয়তো ওয়ানডে সিরিজটি জেতা উচিৎ ছিল। তবে ওদের দলটি অনেক ভালো ছিল। আইরিশ জাতীয় দলের বেশ ক'জন ক্রিকেটার ছিলেন। দলটি অভিজ্ঞ ছিল। এরপরেও আমার মনে হয় সবমিলিয়ে ভালোই হয়েছে।’

Advertisement

চারটি একদিনের ম্যাচ ও তিন টি টোয়েন্টি মিলে তিন তিনটি বড় ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। যা দলের সাফল্যে বড় ও কার্যকর অবদানও রেখেছে। এর মধ্যে টি টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আসলে মিঠুনের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই জিতেছে বাংলাদেশ ‘এ’।

আইরিশদের ১৮৩ রানের বড় সড় স্কোরের পিছু ধেয়ে মিঠুন ও সৌম্য সরকার প্রথম উইকেটে ঝড়ের বেগে ১১৭ রান তুলে দিলেই বাংলাদেশ ‘এ ’ দল পায় জয়ের ভীত। সৌম্য ৩০ বলে ৪৭ রানে ফিরলেও মিঠুন এগিয়ে যান আরও। শেষ পর্যন্ত ৩৯ বলে ৮০ রানের দারুন এক ইনিংস উপহার দেন মিঠুন।

যার ৬৪ রান আসে শুধু ছক্কা (৬টি) ও বাউন্ডারি (৭টি) দিয়ে। এছাড়া ওয়ানডে সিরিজেও এক জোড়া ‘বিগ ফিফটি ’ আসে তার ব্যাট থেকে। এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে মুমিনুল হকের অবিস্মরণীয় উইলোবাজি সম্বলিত ১৩৩ বলে ১৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস সত্বেও প্রথম ম্যাচে ৮৫ রানের বড় জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন মিঠুন। তার ৫১ বলে হার না মানা ৮৭ রানের ইনিংসটির ওপর ভড় করেই ‘এ ’ দল পায় ৩৮৬ রানের হিমালয়সম স্কোর। এছাড়া দ্বিতীয় ম্যাচে হারলেও মিঠুন খেলেন ৭৩ বলে ৭৩ রানের এক পরিপাটি ইনিংস।

মোদ্দা কথা, পুরো সফরে দলের সাফল্যে কার্যকর অবদান ছিল তার। এ সম্পর্কে মিঠুনের মূল্যায়ন, ‘অবশ্যই ভালো লেগেছে যে আমার কন্ট্রিবিউশনে একটি ম্যাচ জিততে পেরেছি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ছিল, সুতরাং আমাদের জেতাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ ওদের বিপক্ষে হারাটা আসলেই খারাপ হতো। তবে আমাদের মধ্যে বিশ্বাস ছিল। আর ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের রান করতে হবে, আমাদের পরিকল্পনাতে এমনটাই ছিল। আমি সেভাবেই চেষ্টা করেছি।’

Advertisement

নিজের ব্যাটিং প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মিঠুন জানিয়েছেন ঘরের ক্রিকেট বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগে তার যে ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ থাকে এবার আয়ারল্যান্ডে তেমনটা ছিলনা। অন্য অ্যাপ্রোচে ব্যাটিং করেছেন। তার ভাষায়, 'দেখেন ব্যাটিংয়ের রোল কিন্তু সবসময় একরকম থাকে না। প্রিমিয়ার লিগে যেমন আমি ওপেন করি, ওয়ান ডাউনে কিংবা টু ডাউনেও খেলি। আমার লক্ষ্য থাকে শেষ পর্যন্ত খেলার। আমার সেখানে যে রোল ছিল আমি সেভাবেই খেলেছি। সামনে যখন ১৮ ওভারে ১৮২ রানের লক্ষ্য দাড়ায় তখনতো আমি ঐ ধরণের রোল (ডিপিএলের মতো) প্লে করলে ম্যাচ জিততে পারবো না।’

আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট স্ট্র্যাকচার মিঠুনের খুব ভাল লেগেছে। তার কাছে মনে হয়েছে অনেকটাই ইংল্যান্ডের মত। এমনকি ক্লাবগুলোর প্র্যাকটিস সুবিধাও অনেক সুন্দর।

‘আইরিশদের স্ট্র্যাকচার অনেক সুন্দর। ইংল্যান্ডের সাথে তাদের অনেক মিল আছে সুবিধার দিক থেকে। আপনার যেকোনো ক্লাবের প্র্যাকটিস সুবিধা অনেক সুন্দর এখানে। ইনডোর, মেশিন, উইকেট এবং যেকোনো ক্লাবের সুযোগ সুবিধা সবই আন্তর্জাতিক মানের। আমি যতটুকু দেখেছি যে ওদের স্ট্রাকচার শতভাগ ঠিক আছে।’

এআরবি/এসএএস/পিআর