এবার কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ৮শ গরু বিক্রি করেছে ‘মেঘডুবি অ্যাগ্রো ডেইরি ফার্ম’ কর্তৃপক্ষ। আরও ১শ বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ ক’দিনে বাকি গরুগুলোও বিক্রি হবে বলে আশা রাখছেন খামার মালিক।
Advertisement
খামারের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক মোহাম্মদ জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান। তারেক বলেন, এবারে ৬০ হাজার থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকা মূল্যের গরু বিক্রি হয়েছে। বাজার দরে আমরা সন্তুষ্ট। যে টার্গেট নেয়া হয়েছিল, তা অনেকটাই পূরণ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে লাভ লোকসান এখনও হিসাব করা হয়নি। বাকি ১শ গরু বিক্রির জন্য এখনও প্রস্তুত রয়েছে। এগুলো বিক্রির পরেই প্রকৃত হিসেব কষতে পারবো।
১০টি গাভী দিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘মেঘডুবি অ্যাগ্রো ডেইরি ফার্ম’। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী শাহিন ২০১৪ সালে রাজধানীর সাতারকুলে এই ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা দেন। চার বছরের ব্যবধানে তার খামারে ১৭শ গরুর লালন-পালন হয়।
১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে সিঙ্গাপুর থেকে ডিগ্রি নেন শাহিন। বাইরে থেকে ডিগ্রি নিলেও চাকরির পেছনে ছোটেননি কখনও। পুরান ঢাকায় স্টিলের ব্যবসা শুরু করেন আর শখের বশে চার বছর আগে ডেইরি ফার্মে মন দেন।
Advertisement
ওই বছর কোরবানির জন্য পাঁচটি ষাঁড় পালনও করেন, যেগুলো নিজে এবং আত্মীয়-স্বজনরা মিলে কোরবানি দেন। এর মধ্য দিয়েই বাজারের ইনজেকশন পুশ করা গরুর মাংসের পার্থক্য বুঝতে পারেন। পরের বছর কোরবানির জন্য আরও গরুর চাহিদা আসতে থাকে শাহিনের কাছে।
আরও পড়ুন >> ১০টিতে শুরু, চার বছরেই ১৭শ গরু
চাহিদা পূরণে খামারের পরিধি বাড়াতে থাকেন। কুষ্টিয়ার হালসায় ‘মেঘডুবি অ্যাগ্রো ডেইরি ফার্ম’-এর দ্বিতীয় শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। হাট থেকে বিভিন্ন দামে গরু কিনে কুষ্টিয়ার ওই খামারে প্রতিপালন শুরু করেন। পরবর্তীতে কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য সেগুলো ঢাকায় নিয়ে আসেন। এরই মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় ‘মেঘডুবি’র তৃতীয় শাখা খোলা হয়। চলতি বছর ঈদুল ফিতরের আগের রাতে বছিলায় গার্ডেন সিটিতে উদ্বোধন করা হয় ‘মেঘডুবি অ্যাগ্রো ডেইরি ফার্ম’র চতুর্থ শাখা।
মূলত গার্ডেন সিটির এ শাখাই এখন মূল খামার হিসেবে বিবেচিত। এখানে প্রায় ৩শ’র অধিক পালন করা হয় এবারে বিক্রির জন্য। ৬০ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ লাখ টাকার গরুও রয়েছে এখানে। মাত্র ৫২ কাঠা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ খামারে আধুনিকমানের সব প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়েছে।
Advertisement
কৃত্রিমভাবে গরু মোটাতাজাকরণের কোনো ব্যবস্থা নেই এখানে। খামারের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক মোহাম্মদ জাগো নিউজকে এমন তথ্য জানান। তেজগাঁও কলেজ থেকে পাশ করা তারেক মেঘডুবি অ্যাগ্রোর মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী শাহিনের মামাতো ভাই।
খামারের বিষয়ে তথ্য দিতে গিয়ে তারেক বলেন, ‘মেঘডুবি’র বিভিন্ন শাখা মিলে প্রায় ১৭শ’র অধিক গরু পালন করা হয় এবার। এর মধ্যে প্রায় ৮শ গরু বিক্রি হয়েছে ইতোমধ্যেই। আরও ১শ প্রস্তুত রয়েছে বিক্রির জন্য। আর সাতারকুল শাখায় ১৮০টি গাভী রয়েছে যেখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ লিটার দুধ মিলছে। বাকিগুলো পরের বছরের জন্য পালন করা হচ্ছে।
এএসএস/এমআরএম/এমএস