নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিআরডি) অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এহেতেশামুল হককে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
দুদকের ঢাকা বিভাগের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে সোনারগাঁ উপজেলার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। মুহূর্তের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন দফতর ফাঁকা হয়ে যায়। প্রকৌশলী এহেতেশামুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফজলুল বারী বাদী হয়ে বিকেলে একটি মামলা দায়ের করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মেসার্স মিরাজ অ্যান্ড মেহরাব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাম্মেল হক দীর্ঘদিন ধরে সোনারগাঁ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে ঠিকাদারি করে আসছেন। সম্প্রতি কাঁচপুর হাইওয়ে থানা থেকে মোশারফ ওমর চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা আরসিসির মাধ্যমে উন্নয়ন কাজের জন্য ১০ লাখ টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্রে কাজ পান তিনি। এ কাজের বিল পাওয়ার জন্য সোনারগাঁ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিআরডি) অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এহেতেশামুল হক এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এর মধ্যে ঠিকাদার মোজ্জাম্মেল হক ৮০ হাজার টাকায় তার সঙ্গে ফাইল ছাড় চুক্তি করেন । দাবিকৃত টাকার মধ্যে গত রমজানের ঈদের পর উপ-সহকারী প্রকৌশলী এহেতেশামুল হককে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরে চূড়ান্ত বিল পাওয়ার জন্য মোজ্জাম্মেল হক সোনারগাঁও উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিআরডি) অফিসে গেলে তিনি বাকি ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। ৫০ হাজার টাকা না দিলে ফাইল ছাড় দিবেন না বলে জানিয়ে দেন।
পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠিকাদার মোজ্জাম্মেল হক ঘুষের ৫০ হাজার টাকা এহেতেশামুল হককে দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরেই দুদকের ঢাকা বিভাগের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি দল ৫০ হাজার টাকাসহ তাকে গ্রেফতার করে।
Advertisement
মেসার্স মিরাজ অ্যান্ড মেহরাব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক জানান, সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর এলাকায় ২০ লাখ টাকায় একটি সড়কের সংস্কার কাজের বিপরীতে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী এহেতেশামুল হক।
আর গাজী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গাজী মুজিবুর রহমান বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসটি বর্তমানে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। টাকা দিলে ফাইল ছাড় দেয়া হয়। পিওন থেকে শুরু করে সোনারগাঁ উপজেলা প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত টাকা দিতে হয়।
সোনারগাঁও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আলী হায়দার খাঁন বলেন, এহেতেশামুল হককে গ্রেফতারের বিষয়টি শুনেছি। তবে আমি ঢাকায় মিটিংয়ে ছিলাম।
দুদকের ঢাকা বিভাগের পরিচালক নাসিম আনোয়ার জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এহেতেশামুল হককে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তার প্যান্টের বাম পকেট থেকে ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
শাহাদাত হোসেন/আরএআর/জেআইএম