ধর্ম

ঋণ নিতে সম্পদ বন্ধক রাখার বিধান

লেনদেনের স্বচ্ছতার জন্য সাক্ষী ও দলিল সম্পাদনে সুস্পষ্ট বর্ণনার পর তাদের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বিধান দিয়েছেন; যারা লেনদেনের সাক্ষী ও দলিল সম্পাদনে অপারগ। তাদের ক্ষেত্রে করণীয় ও উপায় তুলে ধরেছেন পরবর্তী আয়াতে।

Advertisement

যারা দলিল সম্পাদনের জন্য কোনো লোক পাবে না বা সাক্ষী পাবে না; তারা নিজেদের সম্পদ গচ্ছিত রেখে ঋণ গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে সুস্পষ্ট ঘোষণা প্রদান করেছেন।

ঋণের কাজ-কারবারে যে কোনো বিষয়ে সঠিক দায়িত্ব পালন এবং আল্লাহকে ভয় করার ব্যাপারেও আল্লাহ তাআলা মানুষে নির্দেশ দিয়ে বলেন-আয়াতের অনুবাদআলোচ্য আয়াতটি সফর অবস্থায় লেনদেন সম্পর্কে নাজিল করা হয়েছে। সফর অবস্থায় যদি কারো ঋণ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে আর সেখানে কাগজ-কলম এবং লেখক ও সাক্ষী না থাকে তাহলে ঋণগ্রহণে তার বিকল্প ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রবাসে কিংবা সফরে যদি কারো ঋণ গ্রহণের প্রয়োজন হয় তবে ঋণগ্রহীতা কোনো জিনিস ঋণদাতার কাছে বন্ধক বা গচ্ছিত রেখে ঋণ গ্রহণ করবে। হাদিসে এসেছে-

Advertisement

যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়া থেকে চির বিদায় গ্রহণ করেন তখন তার লৌহ বর্মটি আবুশ শাহাম নামক একজন ইয়াহুদির কাছে ‘৩ ওয়াসাক’ যবের বিনিময়ে বন্ধক ছিল। যে যব তিনি নিজ পরিবারের খাবারের জন্য গ্রহণ করেছিলেন। (বুখারি ও মুসলিম)

কুরআন ও হাদিসের আলোকে এটা প্রমাণিত যে, বন্ধক রাখা ইসলামি শরিয়ত সম্মত একটি বৈধ প্রক্রিয়া।

তবে বন্ধক রাখা জিনিসটি যদি এমন হয় যে, এর দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়। তবে তার উপকারিতার অধিকারী হবে মূল মালিক। ঋণদাতা নয়।

আর যদি বন্ধক রাখা জিনিসের জন্য ঋণদাতার কোনো কিছু খরচ বা ব্যয় করতে হয়, তবে সে তার খরচ নিতে পারবে। খরচ নেয়ার পর অবশিষ্ট যা থাকবে তা মূল মালিকে দেয়া জরুরি হবে।

Advertisement

আয়াতে আরো বলা হয়েছে যে, ‘ঋণগ্রহীতার ওপর যদি বিশ্বাস থাকে তবে, বন্ধক ছাড়াই লেনদেন করতে পার। আর এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলাকে ভয় করার কথাও বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন- লেনদেনে সাক্ষী-প্রমাণে কুরআনের বিধান (সুরা বাকারা : আয়াত ২৮২)

ঋণগ্রহীতা যখন তার ঋণ প্রদানের নিশ্চয়তা বা বিশ্বাস থাকবে, ঋণ পরিশোধ করার ভয় যখন থাকবে না; তখন ঋণের বিষয়ে লিখে না রাখলে কিংবা সাক্ষী না রাখলেও কোনো দোষ নেই।

মনে রাখতে হবেকুরআন সুন্নাহর আলোকে প্রমাণিত সাক্ষী গোপন করায় রয়েছে মারাত্মক শাস্তি। আবার সত্য সাক্ষ্য প্রদানে রয়েছে অনেক ফজিলত ও সাওয়াব। এ আয়াতে বিশেষ ভাবে সাক্ষী গোপন করা থেকে বিরত থাকার কথাও বলা হয়েছে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাক্ষ্যদান প্রসঙ্গে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে উত্তম সাক্ষীদাতার কথা বলে দেব না? সে হল এমন এক লোক, যার কাছে সাক্ষী চাওয়ার আগে সে নিজেই সাক্ষী নিয়ে উপস্থিত হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সফর বা প্রবাসে থাকা অবস্থায় ঋণ গ্রহণে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক ভাবে লেনদেন গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলাকে প্রতিটি কাজে বেশি বেশি ভয় করার মাথ্যমে নেকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম