নিবন্ধিত হজযাত্রীদের টিকিট বিক্রি না হওয়া নিয়ে কোনো শঙ্কা দেখছেন না ধর্মসচিব আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘টিকিট নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। ’মঙ্গলবার সচিবালয়ে হজযাত্রীদের বিমান টিকিট নিশ্চিতে পে-অর্ডার ইস্যু না করা ৪৪টি এজেন্সির সঙ্গে বৈঠকে সচিব এ তথ্য জানান। বৈঠকে ১৮টি এজেন্সির মালিক উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
সচিব বলেন, ‘একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, স্লট (সৌদি আরবে হজযাত্রী বহনকারী বিমান অবতরণ) কিন্তু অতিরিক্ত পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কোনোভাবেই পাব না। ১৭ আগস্ট সৌদি এয়ারলাইন্সের শেষ ফ্লাইট, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শেষ ফ্লাইট ১৫ আগস্ট। এর বাইরে কেউ যেতে পারবে না। নিয়ম-কানুনে সৌদি সরকার এবার অত্যন্ত কঠোর।’
২৭ জুলাই থেকে ২ আগস্টের মধ্যে যার যার টিকিট নিয়ে এজেন্সিগুলোকে বাড়িভাড়া করে ফেলতে হবে জানিয়ে আনিছুর রহমান বলেন, ‘মাশায়ের আল মোকাদ্দাসার ক্যাটারিং (খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহ ব্যবস্থা) করে ফেলতে হবে। বাড়ি ভাড়া যদি সম্পূর্ণ না হয়, ক্যাটারিংয়ের বিষয়টি যদি সমাধান না হয়, তবে মোফা (সৌদি সরকার প্রদত্ত অনন্য ভিসা নম্বর) পাবেন না। মোফা না পেলে ভিসার জন্য সাবমিট করতে পারবেন না।’
‘আমি এখনও আশাবাদী টিকিট নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। সমস্যা হবে বাড়ি ভাড়া, মোফা, ক্যাটারিং- এই তিনটি জিনিসের ক্ষেত্রে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, এত টিকিট বিক্রি হবে না- এই মর্মে বিমান পত্র-পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিল। তবে আমি কিন্তু শঙ্কিত নই। আমি এখন দেখতেছি যে, টিকিট বিক্রিতে আমরা কাছাকাছি চলে যাচ্ছি।’
ধর্মসচিব বলেন, ‘এজেন্সির কার্যক্রমের কিছু কিছু বিষয় আমাদের সিস্টেমে আসেনি। এখানে এসে দেখলাম অনেক কাজ হয়ে গেছে। মদিনায় বেশির ভাগেরই বাড়ি ভাড়া দেয়া আছে দেখা যাচ্ছে। মক্কারটা একটু কমবেশি আছে, আশা করছি হয়ে যাবে।’
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি আব্দুস ছোবহান ভূঁইয়া ধর্মসচিবের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের এজেন্সিগুলোর প্রাণের দাবি আপনারা যদি অল্প সময়ের মধ্যে রিপ্লেসমেন্টের বিষয়টির সমস্যা সমাধান করে দেন, তাহলে আপনি দেখবেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিকিটের যে ব্যাকআপ আছে তা পূর্ণ হয়ে যাবে। এতটুকু আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি।’
ইতোমধ্যে এজেন্সিগুলো হজ নীতিমালা অনুযায়ী মোট হজযাত্রীর ৪ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট করে ফেলেছে। অতিরিক্ত রিপ্লেসমেন্ট কেন দাবি করছেন- সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, ‘আমাদের ৫২৮টি হজ এজেন্সি রয়েছে। বেশিরভাগ হাজীদের বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছর। এর মধ্যে টাকা জমা দেয়ার পর পাঁচ থেকে সাত শতাংশ মারা যায়। এখন কী করব! আমি মারা গেলে আমার ফ্যামিলির কেউ যাবে। এজন্য আমাদের এজেন্সিগুলো একটু বেকায়দায় আছে। এজন্য আমি আশা করি, সচিব মহোদয় আমাদের দাবি পূরণ করবেন।’হজ এজেন্সিগুলো মোট হজযাত্রীর ২০ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট চায় বলেও জানান সভাপতি।
Advertisement
হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্মসচিব বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখন কিছু বলব না। আমরা আমাদের অবস্থানে এখন পর্যন্ত আছি। পরে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে আমরা যখন বলার বলব। এখন পর্যন্ত আমি দেখছি না তেমন কোনো থ্রেট আছে।’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২১ আগস্ট (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজে যাবেন। চলতি বছর হজে যাওয়ার ফ্লাইট গত ১৪ জুলাই শুরু হয়েছে।
টিকিট নিশ্চিত না করার কারণ জানতে সোমবার ৫৬টি হজ এজেন্সিকে ডেকেছিল ধর্মমন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার সকালে ৪৪টি এজেন্সির সঙ্গে। বিকেলে আরও ৪৪টি এজেন্সিকে ডাকা হয়েছে।
আরএমএম/এসআর/পিআর