জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিলের পেপারবুকে সব নথিপত্র সংযুক্ত না থাকায় আইনজীবীদের একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
আগামী রোববারের (২২ জুলাই) মধ্যে এই পেপারবুক খালেদা জিয়ার আইনজীবীকে সরবরাহ করতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। আদালতে আজ সম্পূরক পেপারবুক চেয়ে করা আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আব্দুর রেজাক খান প্রমুখ। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
Advertisement
শুনানির শুরুতে দুদকের আইনজীবীর কাছে আদালত জানতে চান, খালেদা জিয়ার আপিলের জন্য যে পেপারবুক তৈরি করা হয়েছে তার মধ্যে কোনো নথিপত্রের কমতি আছে কি-না?
জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পেপারবুকটিতে বেশকিছু নথিপত্র না থাকার বিষয়ে আদালতকে জানান।
পরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে ওই নির্দেশ দেন আদালত। এরপর যথারীতি এই মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আপিল শুনানি করতে বলেন হাইকোর্ট। কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, যেহেতু একটি সম্পূরক পেপারবুক তৈরি করে আমাদের সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন, সেহেতু আপিল শুনানি আগামী রোববার পর্যন্ত মুলতবি রাখা হোক।
জবাবে আদালত বলেন, এ মামলার আপিল নিষ্পত্তিতে আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে। আপনাদের আপিল শুনানি শুরু করতে হবে। এ সময় এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, সম্পূরক আপিল হাতে পাওয়া ছাড়া শুনানি সম্ভব না।
Advertisement
পরে আদালত তাদের পুনরায় আপিল শুনানি করতে বললে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য পেপারবুকে অনেক তথ্যই নেই বলে গত ১২ জুলাই আদালতকে জানান তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এরপর একই বিষয়ে গত ১৫ জুলাই আংশিক শুনানি নিয়ে আদালত দুদক আইনজীবীকে পেপারবুকে অনেক নথিপত্র না থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। এ বিষয়ে সোমবার (১৬ জুলাই) আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই দুদক আইনজীবী মামলার পেপারবুকে নথিপত্র কম থাকা এবং কয়েকটি নথিপত্র ক্রমিক অনুসারে যথাস্থানে না থাকার বিষয়ে আদালতকে জানান।
প্রসঙ্গত, মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত (এফআরআই, চার্জশিট ও রায়ের অংশ) যাবতীয় নথীপত্র একত্রিকরণকেই মূলত পেপারবুক বলা হয়। একটি পেপারবুকে একটি মামলার এ-টু-জেড তথা সব তথ্য-উপাত্ত, দলিল-প্রমাণাদি একসঙ্গে সংযুক্ত থাকে। আর এই পেপারবুক হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা ও অ্যার্টনি অফিস মিলে প্রস্তুত করে থাকে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার ক্ষেত্রেও একটি পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। যেটি প্রায় ১২ হাজার পৃষ্ঠার।
এফএইচ/জেডএ/আরআইপি