চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ভারতের মহারাষ্ট্রে ৬৩৯ কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। শস্যের ক্ষতি, দেনা, ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে ওই কৃষকরা আত্মহননের পথ বেছে নেন বলে মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে।
Advertisement
গত শুক্রবার বিরোধী দলের এক নেতার প্রশ্নের জবাবে নাগপুর বিধান পরিষদে এ পরিসংখ্যান দেন রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাটিল। তিনি বলেন, ‘ওই ৬৩৯ জন কৃষকের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের আওতায় ১৮৮ জনের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
তবে বিরোধী দলের নেতা ধনঞ্জয় মুন্ডে বলেছেন, ‘ঋণ মওকুফ, শষ্যের ক্ষতির ফলে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত প্রকল্প, শষ্যঋণ, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যসহ সরকারের সব প্রকল্পই ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে কৃষকদের আত্মহত্যার সংখ্যা ও প্রবণতা বেড়েছে।’
বিধান সভায় মুন্ডে দাবি করেন, বিগত চার বছরে ১৩ হাজার কৃষক নিজেদের জীবন শেষ করেছেন যার মধ্যে গত বছরেই মারা গেছেন ১৫০০ কৃষক।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর ভারতে আত্মহত্যা করেন পাঁচ হাজার ৬৫০ জন কৃষক। সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা হয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যে। সেখানে দুই হাজার ৫৬৮ কৃষক আত্মহত্যা করেছেন এক বছরে! মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলে আত্মহত্যার হার রীতিমতো আতঙ্কজনক।
আত্মহত্যার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে মাঠপর্যায়ে কাজ করেছে বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। ‘কিষান মিত্র’ নামের ব্যানারে কাজ করছেন তারা। তাদের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ফসল ভালো না হওয়া এবং চাষের জন্য নেয়া ঋণ কৃষকদের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। শুধু বিদর্ভ অঞ্চলেই গত তিন বছরে আত্মহত্যা করেছেন মোট তিন হাজার ১৪৫ জন কৃষক। তাদের মধ্যে ৯০০-রও বেশি, অর্থাৎ প্রায় এক তৃতীয়াংশের ঋণ ছিল। খুব বেশি নয়, মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ঋণ ছিল তাদের। কিন্তু ওই টাকা পরিশোধ করারও সামর্থ্য নেই বলেই তারা আত্মহননের পথ বেছে নেন।
আত্মহত্যা করেছেন এমন কৃষকদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগেরই বয়স ৩০ বা তার কম৷ শতকরা ৩৫ ভাগের বয়স ৩১ থেকে ৪৫-এর মধ্যে৷ গত তিন বছরে ভারতে যত কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে মাত্র ২০৮ জনের বয়স ৬৫ বছরের বেশি ছিল। মনিকা সাহা/এমএআর/পিআর
Advertisement