মুসলিম উম্মাহর জীবনে সর্বোচ্চ আশা-আকাংখার কেন্দ্রবিন্দু বাইতুল্লাহর জিয়ারত। তাই প্রত্যেক মুসলমানের একটা চাওয়া হলো জীবনে একবার হলেও বাইতুল্লাহয় হজ ও ওমরা আদায় করা।
Advertisement
হজ আর্থিকভাবে সাবলম্বী ও শারীরিকভাবে সক্ষম পুরুষ ব্যক্তির জন্য জীবনে একবার ফরজ। আর মহিলাদের জন্য অতিরিক্ত একটি শর্ত ‘মাহরাম’ থাকা সাপেক্ষে ফরজ।
ইতোমধ্যে পবিত্র নগরী বাইতুল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ পালনকারীরা রওনা শুরু করে দিয়েছেন। জিলহজ মাসের ৪/৫ তারিখ পর্যন্ত এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
হজের দীর্ঘ সফরে হজ পালনকারীদের কিছু জরুরি বিষয় জেনে রাখা আবশ্যক। হজের এ সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো-
Advertisement
আরও পড়ুন > ইহরাম বাঁধবেন যেভাবে
হজে রওনা হওয়ার আগে> যারা হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন; তারা অবশ্যই হজ এজেন্সির তথা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখুন।
> বেসরকারি হজযাত্রীরা দেশ থেকেই মক্কা-মদিনায় থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন এবং হোটেল বা বাসস্থান থেকে কাবা শরিফ কিংবা মসজিদে নববি কতদূর সে বিষয়ে দেশ থেকেই খোঁজ খবর নিন।
> আপনার নির্ধারিত যাত্রার দিনে কোনো মোয়াল্লেম বা সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির কর্মকর্তা বা কর্মচারি যাবে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন। মোয়াল্লেম বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সঙ্গে থাকলে জেদ্দা বা মদিনার সেবা কার্যক্রম সহজ হবে।
Advertisement
> হজের নির্ধারিত কাজ তথা- ইহরামের নিয়ম, বাইতুল্লাহ তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া সাঈ’র নিয়ম ও দোয়াগুলো শিখে নিন। এখনই হজের আনুসাঙ্গিক কাজগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।
> সহজে হজ সম্পাদনে হজের নিয়ম কানুনগুলো জেনে নিতে হজ ও ওমরার গাইড সংগ্রহ করুন। বিশেষ করে জাগো নিউজের সহজ ও সংক্ষিপ্ত তথ্য সমৃদ্ধ ‘হজ নির্দেশিকা’ সংগ্রহ করুন।
> হজের সফরকে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাতে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির অভ্যাস তৈরি করুন।
> হজে রওনা হওয়ার আগেই হজযাত্রীরা তাদের পাসপোর্ট, টিকেট, পরিচয়পত্র, মোয়াল্লেম কার্ড, হোটেলের কার্ড, কব্জি বেল্ট সংগ্রহ করুন।
> প্রয়োজনীয় ফোন বা মোবাইল নাম্বারগুলো সংগ্রহ করে রাখুন।
> প্রতিদিন নিয়মিত হাটা-হাটি ও ব্যয়ামের মাধ্যমে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সুদৃঢ় করার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন > হজের সফরে তালবিয়া পাঠে করণীয়
হজের সফরে যা নেয়া জরুরিহজের সফর সাধারণত কমপক্ষে ১৫ দিন থেকে প্রায় ২ মাসের হয়ে থাকে। এ দীর্ঘ সফরে একজন মানুষের অনেক কিছুরই প্রয়োজন হয়। তবে ব্যাগেজ যত কম হয় ততই ভাল। তাই একান্তই যা সঙ্গে নেয়া প্রয়োজন তাহলো-
> ইহরামের কাপড় ২ সেট, লুঙ্গি, গেঞ্জি, গামছা, ফতুয়া, পানজাবি, পা-জামা, হালকা সেন্ডেল, পাতলা চাদর ও হাওয়াই বালিশ।
> মেসওয়াক, সাবান, তেল, টুথপেস্ট।
> একান্ত ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ছোট প্লেট এবং মগ। (খাবারের জন্য সাধারণত প্লেট ও মগের প্রয়োজন হয় না)
> প্রয়োজনীয় ওষুধ (ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, আমাশয়, মাথা ব্যথা, গ্যাস্টিক), বেশি বেশি খাওয়ার স্যালাইন সঙ্গে রাখুন। > ব্যাগ ও বেল্ট- একটি সব মালামাল রাখার জন্য বাংলাদেশের পতাকার ছাপসহ বড় ব্যাগ- বাইতুল্লাহ তাওয়াফ, মিনা, মুজদালিফা, আরাফাসহ বিভিন্নস্থান পরিদর্শনে ইহরামের কাপড় ও জুতা ইত্যাদি রাখার জন্য।- পাসপোর্ট-টিকিট, টাকা পয়সা, মেসওয়াক ও ইমাজেন্সি ওষুধসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রাখার জন্য কোমরের বেল্ট।
> প্রয়োজনীয় অর্থ- রিয়াল বা ডলার।
আরও পড়ুন > ইহরাম অবস্থায় যে সব কাজ করা নিষেধ
বিশেষ করেহজের যাওয়ার পূর্বেই ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং ওষুধ সংগ্রহ করার পাশাপাশি ব্যবস্থাপত্র জেনেটিক নামসহ প্রেসক্রিপশন ও উপদেশ সংগ্রহ করা। বিভিন্ন ভাইরাসের ভ্যাকসিট বা টিকা গ্রহণ করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা তা সব মেহমানদেরকে হজে রওনা হওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি সুন্দর ও সুস্থভাবে গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। হজের সফরে নিরাপদে সব কাজগুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান । হজে মাবরুর কবুল করুন। হজ সম্পাদনের পর সুস্থভাবে নিজ নিজ ঠিকানায় পৌছার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস