থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের জলমগ্ন গুহায় স্থানীয় ফুটবল দল ‘উইল্ড বোর’র দীর্ঘ আটকাবস্থা ও শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান এখন পুরো বিশ্বের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। দু’দিনের অভিযানে ইতোমধ্যে সংকীর্ণ ও কণ্টকাকীর্ণ গুহার চার কিলোমিটার দূরে উঁচু একটি স্থানে আটকা এই কিশোর ফুটবল দলের ৮ সদস্যকে উদ্ধার করা হয়েছে।
Advertisement
দেশটির উত্তরাঞ্চলের চিয়াং রাই প্রদেশের গুহায় আটকা ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে ১৩ বিদেশি ডুবুরি ও থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর অভিজাত শাখা থাই নেভি সিলের পাঁচ সদস্য কাজ করছেন। এছাড়া গুহার ভেতরে ও প্রবেশ পথে আরো অন্তত ৯০ জন ডুবুরি উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত আছেন।
গত ২৩ জুন থেকে গুহায় আটকা ১২ কিশোর ও তাদের কোচ আটকা ছিলেন। কিন্তু রোববার ও সোমবার দুই দফায় অভিযান চালিয়ে আট কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরের নিউমোনিয়ার শঙ্কা
Advertisement
গুহায় আটকা কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছর। দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার সংকীর্ণ ও উঁচু-নিচু জলমগ্ন পথ পাড়ি দিয়ে কিশোরদের উদ্ধারে রোববার অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিকে থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, গুহায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ও বর্ষা মৌসুমে বর্ষণের কারণে তাদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের উদ্ধারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
কিন্তু রোববার নাটকীয়ভাবে বন্যার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং বর্ষণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন জানান, কিশোরদের উদ্ধারে এখনই উপযুক্ত সময়।
থাইল্যান্ডে যখন এই শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান চলছে ঠিক তখনই দেশটিতে হাজির হয়েছেন হলিউডের দুই চলচ্চিত্র প্রযোজক। কারণ তাদের হাতে অপচয় করার মতো সময় নেই, থাই কর্তৃপক্ষের অনুমতি মিললে গুহায় নির্ঘুম, বিদঘুটে ও অন্ধকারে বন্দিদশা থেকে মুক্তির রোমহর্ষক কাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র।
আরও পড়ুন : থাই গুহায় শেষ অভিযান শুরু
Advertisement
বার্তাসংস্থা এএপি বলছে, মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পিওর ফ্লিক্স তাদের অংশীদার মাইকেল স্কট এবং সহ-প্রযোজক অ্যাডাম স্মিথকে থ্যাম লুয়াং গুহায় পাঠিয়েছে। ইতোমধ্যে তারা একটি সম্ভাব্য চলচ্চিত্র প্রকল্প নিয়ে প্রাক-স্বাক্ষাৎকারও গ্রহণ করেছেন।
তবে মার্কিন এই কোম্পানির গুহায় শিশুদের আটকাবস্থা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণকে স্পর্শকাতর হিসেবে দেখা হবে কি-না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডাম স্মিথ বলেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে অন্য কোম্পানিও এগিয়ে আসছে। সেজন্য আমরা দ্রুত কাজ করার লক্ষ্যে আগেই চলে এসেছি।
তবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা আদৌ সম্ভব হবে কি-না সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় মার্কিন এই চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তবে তারা থাই কিশোরদের গুহায় বন্দিদশা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী।
এসআইএস/পিআর