থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের থ্যাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়া কিশোর ফুটবল দলের আরও দুই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো অভিযান শুরুর পর ওই দুই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
বর্তমানে তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। যে ১২ জন কিশোর গুহায় আটকা পড়েছিল তাদের মধ্যে ১০ জনকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখন আরও দুই কিশোর এবং তাদের কোচ গুহায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু হয়। গত ২৩ জুন থেকে গুহাটিতে ১২ কিশোর এবং তাদের কোচ আটকা পড়ে ছিলেন। আটকা পড়ার ১০ দিন পর তাদের খোঁজ পাওয়া যায়।
রোববার কিশোর ফুটবল দলের ১২ সদস্য এবং তাদের কোচকে উদ্ধারে প্রথম অভিযান শুরু হয়। দু’দিনের অভিযানে মোট আট কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। সোমবার গুহার ভেতর থেকে চার কিশোরকে বের করে আনার পর দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। গুহার প্রবেশপথ থেকে চার কিলোমিটার দূরে আটকা রয়েছে শেষ দুই কিশোর ও তাদের কোচ একাপল চ্যান্তাওং।
Advertisement
মঙ্গলবারের অভিযানে মোট ১৯ জন ডুবুরিকে গুহার ভেতরে উদ্ধার অভিযানে পাঠানো হয়েছে। এক একজন কিশোরকে দু'জন করে ডুবুরি বাইরে আনার জন্য গুহার ভেতরে প্রবেশ করেছেন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এক কর্মকর্তা জানান, যদি সব কিছু পরিকল্পনা মতো হয় তবে আজই বাকি সবাইকে বাইরে উদ্ধার করে আনা সম্ভব হবে। উদ্ধারের অপেক্ষায় গুহার ভেতরে যে কিশোররা রয়েছে তাদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। আর তাদের কোচের বয়স ২৫ বছর।
ওই কিশোর দলটি গুহায় আটকা পড়ার পর থেকেই তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কাড়ে। বিভিন্ন দেশে থেকে অভিজ্ঞ ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। ব্রিটিশ ডুবুরি ও মার্কিন বিমান বাহিনীর সদস্যরা, অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক পানির নিচে কাজ করতে পারা রোবট এবং বেলজিয়ামের এক নাগরিকও উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে অভিযানে যুক্ত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া আট কিশোরের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। তবে দু'জন কিশোর ফুসফুসজনিত সমস্যায় ভুগছে। মেডিকেল টিম ধারণা করছে, তারা সম্ভবত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
Advertisement
পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভালো আছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় ধারণা করা হয়েছিল উদ্ধার হওয়া কিশোররা ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছে। কিন্তু শুধুমাত্র দু'জনের এ ধরনের সমস্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পূর্ণাঙ্গ রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
কাঁচের গ্লাসের কাছে দাঁড়িয়ে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের দেখতে পারছেন। কিন্তু সরাসরি বাহ্যিকভাবে কিশোরদের কাছে যেতে পারবেন না তারা। কারণ এই মুহূর্তে তাদের কাছে গেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
উদ্ধার হওয়া কিশোররা এখন নরম খাবার খেতে পারছে। তবে তাদের এখন ঝাল বা ভারী কোনো খাবার দেয়া হচ্ছে না। শিশুরা অনেকেই থাই ফ্রাইড রাইস খেতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এখন এসব খাবার দেয়া হচ্ছে না।
টিটিএন/আরআইপি