দেশজুড়ে

লোহার ব্রিজে বাঁশের মাচা

অযত্ন আর সময়মতো মেরামত না করায় খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের আমুরকাটা খালের উপর নির্মিত ব্রিজটির অবস্থা এখন একেবারেই করুণ। ব্রিজটির অবস্থা এতই নাজুক যে চলতি বর্ষায় এটি পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে ব্রিজের উপর বাঁশের মাচার ব্যবস্থা করলেও তার উপর দিয়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না শিশুরা। এলাকাবাসী ব্রিজটি সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Advertisement

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের আমুরকাটা স্লুইস গেটের খালটি মরাকুচিয়া নদী অভিমুখে প্রবাহিত হয়েছে। ওই খালের দু’পাড়ে দীঘা ও দক্ষিণ কাইনমুখী নামে ২টি গ্রামের অবস্থান। যেখানে ৩০ হাজারের বেশি লোকের বসবাস। দু’গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য স্থাপিত একমাত্র দীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়টি দীঘা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দক্ষিণ কাইনমুখী গ্রামের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে। ফলে ৮০’র দশকে স্কুল সংলগ্ন এলাকায় খালের উপর দু’গ্রামবাসীর জন্য একটি বেইলি ব্রিজ তৈরি করা হয়। কিন্তু অবহেলায় ব্রিজটি ভেঙেচুরে জরাজীর্ণ ভাঙড়িতে পরিণত হয়।

বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে খালের পাশ দিয়ে দু’গ্রামের দুটি কাঁচা রাস্তা থাকায় ঘর হতে মানুষ বের হতে পারছে না। ফলে দক্ষিণ কাইনমুখী গ্রামের শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে কাঁদা ঠেলে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজের উপর উঠছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়ায় বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার অনেক কমে গেছে। শেষমেষ এলাকার লোকজন নিজেদের উদ্যোগে ব্রিজটির উপর বাঁশের মাচা তৈরি করে কিছুটা হলেও যাতায়াতের ব্যবস্থা করে। কিন্তু সেটাও শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।

Advertisement

ইউপি সদস্য রাজেশ চন্দ্র মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকায় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেও সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এলাকার বাসিন্দা ভবেন্দ্রনাথ মন্ডল (৬৫) জানান, এলাকার রেষারেষির কারণে ব্রিজটি সংস্কারে কারোর কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা, এমনকি জেলা পরিষদ সদস্যও রয়েছে।

শিবুপদ গাইন জানান, ব্রিজটি সংস্কার না হলে দক্ষিণ কাইনমুখী শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

দীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী দক্ষিণ কাইনমুখী গ্রামের। বর্ষার সময় ওই জরাজীর্ণ ব্রিজ পার হয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না। যে কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির সংখ্যা অনেক কমে গেছে।

Advertisement

আলমগীর হান্নান/এফএ/আরআইপি