নিথর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন মেসি। চারপাশ থেকে সতীর্থরা এসে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাকে। হাত মিলিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে একাই হারানো কিলিয়ান এমবাপ্পেও। রাজ্যের হতাশায় যেন মুষড়ে পড়েছেন তিনি। আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসির এমন বিমর্ষ চেহারা এর আগেও অনেকবার দেখেছে সবাই। কিন্তু আগে প্রত্যেকবারই কোন না কোন বোমা ফাটিয়েছিলেন এই বার্সা তারকা। কিন্তু এবার যেন মুখে কুলুপ এঁটে আছেন তিনি।
Advertisement
২০১৬ কোপা আমেরিকাতে চিলির বিপক্ষে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করে তাৎক্ষণিক এক বার্তায় বলেছিলেন, ‘জাতীয় দলের হয়ে আমার আর খেলার সম্ভাবনা নেই। ড্রেসিং রুমে যখনই প্রবেশ করি তখন মনে হয়, দলটার হয়ে এখানেই আমার সমাপ্তি হচ্ছে।’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মেসির কান্না বিজড়িত চেহারা আজও পীড়া দেয় আর্জেন্টাইন সমর্থকদের।
মেসির এমন বিদায়ের পরেও কেটে গেছিল অনেকদিন। আবারো জাতীয় দলে ফিরেছেন। দলকে টেনে তুলেছেন বিশ্বকাপে। ফ্রান্সের বিপক্ষে হারার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা সংবাদ সম্মেলন, কোথাও পাওয়া যায়নি তার হদিস। বার্সেলোনায় ফিরে পরিবারের সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়ে হারানো মনোবল ফিরে পাওয়াই যেন এখন তার প্রধান কাজ। এ যেন সব সমালোচনার হাত থেকে বাঁচার ব্যর্থ চেষ্টা। কতদিন পারবেন এমন করে থাকতে তিনি?
বিশ্বকাপ শুরুর আগে জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ ট্রফি না যেটা পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। তবে কেন এত নিশ্চুপ হয়ে গেলেন?
Advertisement
মেসিকে আমরা স্বল্পভাষী হিসেবেই বেশি চিনে থাকি। গণমাধ্যম কিংবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাবার্তা একটু কম বলে থাকেন। ঘনিষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করেন মেসি। নিজের বাজে সময়গুলোতে চুপচাপ থাকাই যেন তার চরিত্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য।
বিশ্বকাপটা একদমই যাচ্ছেতাই রকমের ছিল মেসির জন্য। প্রথম ম্যাচে পেনাল্টি মিস করে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হন। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারার ম্যাচে দলের হয়ে বিন্দুমাত্র অবদান রাখতে পারেননি।
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে একমাত্র গোলটি পেয়েছিলেন। কিন্তু কোয়ার্টারে সেই বিবর্ণ মেসিকে আবার দেখা গেছে। ৪-৩ ব্যবধানে হারলেও তিন গোলের দুটিতে এসিস্ট করা ছাড়া বিশ্বকাপে আর কোন বলার মত পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি এলএম টেন।
মেসি চুপ করে থাকলেও তাকে ঘিরে আশা দেখছেন ভক্তরা। তাদের আশা, হয়তো খুব দ্রুতই মেসি তাদেরকে ভালো কোন সংবাদ দিবেন। মেসির ২০২২ পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে ভালো সংবাদ বোধকরি আর্জেন্টাইন সমর্থকদের আর কিছু নেই।
Advertisement
আরআর/জেআইএম