পেনাল্টি শ্যুটআউট, দর্শকরা ধরেই নেন গোল হওয়ার সম্ভাবনা ৯০-৯৫ ভাগ। ভালো গোলরক্ষকেরও কিছু করার থাকে না, যদি সঠিক জায়গায় শটটি নিতে পারেন শ্যুটার। ভাগ্যের একটা ব্যাপার আছে। তবে বুদ্ধিমত্তাকেও আপনি একেবারে অগ্রাহ্য করতে পারবেন না। অনেক সময় খেলোয়াড়ের চেহারা দেখে গোলরক্ষক আন্দাজ করে ফেলেন, কোনদিকে শটটা আসতে পারে। অনেক সময় আবার শ্যুটারকে নার্ভাসও করে ফেলেন তারা। যার ফলশ্রুতিতে সহজ সুযোগও নষ্ট করে ফেলেন কেউ কেউ।
Advertisement
বুদ্ধিমত্তার এই ভেলকিতে হয়তো দুই-একটি শট ঠেকিয়ে দেয়া সম্ভব। তবে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচ রোববার রাতে যা করে দেখালেন, অনেকেরই হয়তো শুনে বিশ্বাস হবে না। যারা খেলা দেখেছেন, তাদেরই তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে! একটি বা দুটি নয়; তিন-তিনটি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন মোনাকোর এই গোলরক্ষক। যার অবিশ্বাস্য নৈপুন্যেই শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে ডেনমার্ককে টাইব্রেকারে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ক্রোয়েশিয়া।
টাইব্রেকারে ডেনমার্কের নেয়া প্রথম পেনাল্টিটিই ঠেকিয়ে দেন সুবাসিচ। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের পোস্টের মধ্যে নেয়া শট ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন তিনি। এরপর দুটি গোল হলেও দলের চতুর্থ পেনাল্টি নিতে আসা বদলি খেলোয়াড় লাসে স্কোনের শটও একইভাবে ডান দিকে ঝাপিয়ে আটকে দেন সুবাসিচ। সবশেষে নিকোলাইন জার্গেনসনের শ্যুটে শেষমূহুর্তে পা ধরে দিয়ে দলকে আনন্দে ভাসান এই গোলরক্ষক।
ম্যাচশেষে ক্রোয়েশিয়া কোচ তাই অবলীলায় স্বীকার করে নিলেন, জয়ের নায়ক আর কেউ নন-সুবাসিচই। তিনি বলেন, 'আজ রাতে সে ছিল আমাদের নায়ক। সে তিনটি পেনাল্টি শ্যুট ঠেকিয়ে দিয়েছে। আপনি তো প্রতিদিন এমন কিছু দেখতে পারবেন না।'
Advertisement
বিশ্বকাপের ইতিহাসেই তিন পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেয়ার ঘটনা বিরল। ২০০৬ সালে প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিলেন পর্তুগালের রিকার্ডো। সুবাসিচ দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে তার সঙ্গে জায়গা করে নিলেন।
এমএমআর/পিআর