‘এখানে ভালো আছেন মা, বাবা তুমিও ঢাকায় চলে আসো। যে বাসা নিয়েছি, আমরা সবাই সুন্দরভাবে থাকতে পারব। ঠাকুরগাঁওয়ে পরে যাবে মা। বাবা তুমিও আমাদের কাছে চলে আসো।’
Advertisement
এভাবেই ছেলে সেজানের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল তার বাবা সইদের। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের কথাগুলো মনে করে আর্তনাদ করছেন বাবা।
রোববার রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারানো বসুমতি পরিবহনের একটি বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান শাহরিয়ার সৌরভ সেজান (২৮)। ছেলের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তেই মা-বাবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
নিহত সেজানের বাবা আব্দুস সইদ বলেন, একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কয়েকদিন আগে বিয়ে করে সেজান। পরে তার মাকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তার স্ত্রীও ছিল। খুব ভালোভাবেই চলছিল তার সুখের সংসার। আমাকেও বলেছিল, ঢাকায় নিয়ে যাবে। কিন্তু মুহূর্তেই সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো। গর্ভধারিণী মাকে সন্তানের লাশ কাঁধে এখন ঠাকুরগাঁওয়ে আসতে হবে। সেজানের লাশ নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে রওনা দিয়েছে তারা। আগামীকাল সেজানের লাশ দাফন করা হবে।
Advertisement
নিহত সেজান ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৯তম আবর্তনের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ঠাকুরগাঁও শহরের বাজারপাড়া এলাকার কলেজ শিক্ষক আব্দুস সইদের ছেলে সেজান।
ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারানো বসুমতি পরিবহনের বাসটি কেড়ে নেয় সেজানের প্রাণ। রোববার সকালে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ওভার ব্রিজের কালশি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পথচারী ও যাত্রীদের সহযোগিতায় ঘাতক বাসটি আটক করা গেলেও পালিয়ে যান বাসের চালক ও সহকারী।
সেজান সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের খবর পাওয়ার পর ঠাকুরগাঁওয়ে তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের মাঝে শোকের মাতম শুরু হয়। বছর খানেক আগ থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করে সেজান।
রবিউল এহসান রিপন/এএম/পিআর
Advertisement